উত্তরপ্রদেশের কানপুরে এক তামাক ব্যবসায়ীর (Tobacco Tycoon) বাড়িতে গিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ আয়কর অফিসারদের। টানা তিন দিন তল্লাশি চালাচ্ছেন তাঁরা। আর সেটা করতে গিয়েই বের হচ্ছে একের পর এক দামি-দামি গাড়ি, মোটরসাইকেল। দিল্লিতে বংশীধর টোব্যাকো কোম্পানির মালিক কে কে মিশ্রের বাংলোতে কোটি-কোটি টাকার গাড়ি দেখে ঘাবড়ে যান অভিজ্ঞ আয়কর কর্তারাও। আরও অদ্ভুত বিষয়টি হল, প্রতিটি গাড়িরই নম্বর প্লেটে 4018 নম্বরটি রয়েছে। এর রহস্য কী, কেনই বা এমন করা হয়েছে, তা ভেবে পাচ্ছেন না আয়কর বিভাগের কর্তারা।
তবে তদন্তের তৃতীয় দিনে একটি প্রিয়া স্কুটারও খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। বহু বছরের পুরনো। ফেরারি, রোলস রয়েস, বিএমডব্লু বাইকের মাঝে নিতান্তই বেমানান। তবে পুরনো সেই স্কুটারও যত্ন সহকারে সাজিয়ে রাখা। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সেই স্কুটারের নম্বরও 4018।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ওই তামাক ব্যবসায়ীর রোলস-রয়েস এবং কোটি কোটি টাকার অন্যান্য বিলাসবহুল গাড়ি-বাইকের ছবি ভাইরাল হয়েছে। সমস্ত গাড়ির সংখ্যাই 4018। পুরানো স্কুটারের সংখ্যাও 4018।
এর রহস্য কী?
তামাক ব্যবসায়ী কে কে মিশ্র সেই সময়ে স্ট্রাগেল করছিলেন। আর পাঁচজন ছোট ব্যবসায়ীর মতোই নিজের সংস্থাকে কোনওমতে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন। আর সেই কঠিন লড়াইয়ের দিনে একটু অতি সাধারণ প্রিয়া স্কুটার-ই তাঁর ভরসা ছিল। সেটির নম্বর প্লেট ছিল 4018। শুরুর দিনের সেই বন্ধুকে ভোলেননি তিনি ও তাঁর পরিবার। কোটি টাকার গাড়ি কেনার সময়েও 4018 নম্বর থাকা প্লেটই নেন। সম্ভবত এই নম্বরকে 'লাকি'-ও মনে করেন তাঁরা।
স্কুটারটি কে কে মিশ্রের বাড়িতে আসার পর থেকেই যেন তাঁর সময় বদলে যায়। ব্যবসা গতি লাভ করে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই কে কে মিশ্র তার সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন।
ব্যবসায়ীর পরিবার স্কুটার নিয়ে একথা জানিয়েছেন
পরিবারের মতে, এই স্কুটারটি তাঁদের জন্য খুবই লাকি। যে কারণে কোটি কোটি টাকার গাড়ির চেয়েও যত্ন সহকারে স্কুটারটি রাখা হয়েছে। একেবারে সুন্দর করে পালিশ করে রাখা।
অ্যাকাউন্টে কারচুপির সন্দেহ আয়কর দফতরের
উল্লেখ্য, আয়কর বিভাগ একযোগে দিল্লি এবং কানপুরে তামাক ব্যবসায়ীর বাড়ি, দফতরে হানা দিয়েছে। তিন দিনের রেইজে ৬০ কোটি টাকার বিলাসবহুল গাড়ির হদিশ মিলেছে। নগদ সাড়ে ৪ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। আয়কর দফতরের কর্তাদের ধারণা, তামাক সংস্থা তাদের অ্যাকাউন্টে কিছু কারচুপি করেছে। তাই এই অভিযান চালানো হয়। সংস্থা তার টার্নওভার ২০-২৫ কোটি টাকা হিসাবে দেখিয়েছিল। কিন্তু সেখানে প্রকৃত লেনদেন ১৫০ কোটি টাকারও বেশি বলে জানা গিয়েছে।