মানসিকভাবে অসুস্থ এক মহিলাকে (Mentally Unwell Woman) গত ৩৫ বছর ধরে ঘরের মধ্যে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে মুক্তি পেলেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) ফিরোজাবাদে (Firozabad)। হাতরাসের বিধায়ক অঞ্জুলা মাহুর (Anjula Mahour) এই মহিলার সম্পর্কে জানতে পেরে সাহায্য করার কথা ভাবেন। সেবা ভারতীর (Seva Bharati) সদস্যদের সহায়তায় তিনি ওই মহিলাকে মুক্ত করে আগ্রার মানসিক হাসপাতালে পাঠান। পুরো বিষয়টি জানলে আপনিও অবাক হবেন।
টুন্ডলার মহম্মদাবাদ গ্রামের বাসিন্দা স্বপ্নার বয়স তখন মাত্র ১৭ বছর, সেই সময় পরিবার জানতে পারে যে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। পরিবারের লোকজন তাঁকে অনেক চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু স্বপ্নার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। অনেক চিকিৎসার পরও যখন স্বপ্না সুস্থ হননি, তখন পরিবারের লোকজন তাঁকে ঘরে বন্দি করে রাখে। যাতে স্বপ্ন কোথাও না পালিয়ে যায়। এ জন্য তাঁর পায়ে শিকলও (Chains) বেঁধে দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা এটা করতে চাননি, কিন্তু তাঁরা বাধ্য হয়েছিলেন করতে।
স্বপ্নাকে ঘরের মধ্যে খাবার দেওয়া হত। স্বপ্নার একসময় মনে হয়েছিল যে তাঁর জীবন বোধহয় এই ঘরে বন্দি হয়েই কেটে যাবে। ২০২১ সালে স্বপ্নার বাবা মারা যান। তারপরে দুই ভাই মানসিক অসুস্থ বোনের দেখাশোনা করতে শুরু করে। স্বপ্না পুরো ৩৫ বছর ধরে এমন জীবনযাপন করছেন। তিনি নিজের অবস্থা সম্পর্কেও খুব কম জানন। কারণ তিনি খুব কমই বাইরের লোকের সঙ্গে কথা বলেছেন।
হাতরাসের বিধায়ক অঞ্জুলা মাহুরের কাছ থেকে স্বপ্নার কথা জানতে পারেন সেবা ভারতীর সদস্যরা। তারপর মহিলার সম্পর্কে খোঁজ নিতে লোক পাঠানো হয়। নির্মলা সিংয়ের নেতৃত্বে সেবা ভারতীর দল ফিরোজাবাদে স্বপ্নার বাড়িতেো পৌঁছে যায়। সেখানে স্বপ্নার অবস্থা দেখে চোখে জল চলে আসে সদস্যদের।
এ বিষয়ে স্বপ্নার ভাইয়েরা জানান, বোনকে এভাবে বেঁধে রাখতে চান না তাঁরা। কিন্তু মানসিক অবস্থা দেখে এভাবেই রাখতে হয়। স্বপ্নার চিকিৎসার জন্য পরিবার অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনও উপকার হয়নি। ভাইয়েদের কথা শুনে চিকিৎসার জন্য স্বপ্নাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করার প্রস্তাব দেন নির্মলা সিং। যাবতীয় সাহায্য করার কথাও বলা হয়। স্বপ্নার পরিবারের সদস্যরা সেই প্রস্তাবে রাজি হন। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বপ্নাকে আগ্রার মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। পরিবারের সদস্যরা আশা করছেন, এবার হয়ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন স্বপ্না।