প্রথমবার ভিডিও ফুটেজ মিলল উত্তরকাশীতে টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের। উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে ধসের কারণে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করতে গত ১০ দিন ধরে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। সোমবার বড় সাফল্য পেয়েছেন উদ্ধারকারীরা। শ্রমিকদের জন্য প্রথমবারের মতো ডাল ও খিচুড়ি পাঠানো হয়েছে। ৬ ইঞ্চি চওড়া পাইপের মাধ্যমে বোতলে ভরে শ্রমিকদের কাছে খাবার পাঠানো হয়। সিসিটিভি-র মাধ্যমে টানেলে আটকে থাকা শ্রমিকরা কেমন আছেন, তাতে নজর রাখা হবে। উদ্ধারকার্যে জড়িত জড়িত আধিকারিকরা ওয়াকিটকির মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
শ্রমিক ও সুড়ঙ্গের ভেতরে থাকা ব্যক্তিদের অবস্থা জানতে পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গে ক্যামেরা পাঠানো হয়েছে। এতে টানেলের ভিতরের পরিস্থিতি ধরা পড়েছে। ওয়াকি টকির মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। সুড়ঙ্গের ভিতর থেকে ফুটেজের মাধ্যমে শ্রমিকদের পরিস্থিতি দেখা হচ্ছে।
উদ্ধারকার্যের দায়িত্বে থাকা কর্নেল দীপক পাতিল বলেন, আমরা টানেলের ভেতরে আটকে পড়া কর্মীদের খাবার, মোবাইল ফোন ও চার্জার পাঠানোর চেষ্টা করছি। আমরা ভিতরে ওয়াইফাই সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করব। DRDO-র রোবটও কাজ করছে।
বোতলের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হয়
সোমবার রাতে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ শ্রমিকের কাছে ২৪ বোতল খিচুড়ি ও ডাল পাঠানো হয়। ৯ দিন পর প্রথমবারের মতো পেট ভরে খাবার পান শ্রমিকরা। এ ছাড়াও কমলালেবু, আপেল ও লেবুর রসও পাঠানো হয়েছে। আজ শ্রমিকদের জন্য আরও অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী পাঠানো হবে। এতদিন পাইপের মাধ্যমে শুধু মাল্টি ভিটামিন, মুড়ি এবং শুকনো ফল পাঠানো হচ্ছিল। ৬ ইঞ্চি চওড়া পাইপের মাধ্যমে এই খাবার শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
টানেল থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার জন্য ৫টি পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্তমানে দু'টি পরিকল্পনার ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে। প্রথম আমেরিকান অগার মেশিনের মাধ্যমে টানেলের ধসের মধ্যে দিয়ে ফুঁড়ে ৮০০-৯০০ মিমি ইস্পাতের পাইপ ঢোকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই পাইপের সাহায্যে শ্রমিকদের বের করে আনা হবে। অগার মেশিন দিয়ে ২৪ মিটার খননও করা হয়েছিল। কিন্তু এরপরেই হঠাৎ মেশিনটি খারাপ হয়ে যায়। এর পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আজ আবার অগার মেশিন দিয়ে ড্রিলিং শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, উল্লম্ব ড্রিলের পরিকল্পনাও রয়েছে। এর জন্য মেশিনটি টানেলের উপরে পৌঁছে গিয়েছে। আজ বিকেল থেকে এই মেশিন খনন কাজ শুরু করবে। টানেলের উপর থেকে খনন করা হবে। শ্রমিকদের সরাসরি উপর থেকে বের করে আনা হবে।
শ্রমিকরা ১০দিন ধরে আটকে আছেন
উত্তরকাশী জেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সিল্কিয়ারা টানেলটি কেন্দ্রীয় সরকারের চারধাম 'অল ওয়েদার রোড' প্রকল্পের অংশ। ব্রহ্মখাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কে নির্মিত এই টানেলটি ৪.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। গত ১২ নভেম্বর, টানেলের একটি অংশ ধসে পড়ে। শ্রমিকরা টানেলের ভেতরে আটকা পড়েন। তাঁদের মুক্ত করতে ১০ দিন ধরে উদ্ধার অভিযান চলছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁদের উদ্ধার করা যায়নি।