রাজনৈতিক জগতে ফের এক নক্ষত্রপতন। বয়সজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। বৃহস্পতিবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় এইমস হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর রাত ৯টা ৫১ মিনিটে তাঁর প্রয়াণ হয়। আদ্যপান্ত ভদ্রলোক, নম্র স্বভাবের ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর হাত ধরেই ভারতে খুলে যায় মুক্ত বাজার অর্থনীতির দরজা। তাঁর অবদান রাজনৈতিক জগতে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থেকে যাবে।
১৯৩২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাব প্রদেশের একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মনমোহন সিং। জীবনে শিক্ষা, অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছিলেন তিনি। ১৯৪৮ সালে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ১৯৫৭ সালে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে অনার্স ডিগ্রি পান। তিনি ১৯৬২ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাফিল্ড কলেজ থেকে অর্থনীতিতে ডিফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষার প্রতি তাঁর অনুরাগে তিনি পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লি স্কুল অফ ইকোনমিক্সে ভর্তি হন।
ভারতীয় রাজনীতি ও অর্থনৈতিক সংস্কারে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৯৯১ সালে ভারতীয় অর্থনীতিতে মুক্ত বাজারের পথ খুলে দেন তিনি। তাঁর এই অবদান কখনওই ভোলা যাবে না। ২০০৪-২০১৪ পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭১ সালে ভারত সরকারে যোগদান করে বাণিজ্য মন্ত্রকে অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হন তিনি। ১৯৭২ সালে তিনি অর্থ মন্ত্রকের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হন। এর পরে তিনি অর্থ মন্ত্রকের সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত, বিজেপির ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা ছিলেন। ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ দিল্লি থেকে লোকসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু সফল হননি। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত, বিজেপির ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা ছিলেন। ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ দিল্লি থেকে লোকসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু সফল হননি। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর, তিনি ২২ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই পদে বহাল ছিলেন।