জাতীয় রাজনীতিতে নতুন করে দলের পদাপর্ণের প্রথম ধাপে হতাশাই হাতে এল তৃণমূলের। গোয়ায় বিধানসভা ভোটে একটিও আসন পেল না বঙ্গের দল। শরিক দল মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি পেয়েছে ২টি আসন। আসন না পেলেও তৃণমূল বিরোধী ভোট ভাগ করে বিজেপির সুবিধা করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অধীর চৌধুরী। নির্বাচনী পরিসংখ্যানও বলছে, বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ায় ধাক্কা খেয়েছে কংগ্রেস। তাই ৩৩ শতাংশ ভোট নিয়েও সরকার গড়তে চলেছে মোদীর দল।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট বলছে, ৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় ২০টি গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। অর্থাৎ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা আসেনি। ১১ আসনে থেমে গিয়েছে কংগ্রেস। আপ পেয়েছে ২টি। শরিক মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি ২টি পেলেও তৃণমূলের ভাঁড়ারে শূন্য। নির্দল ৩টি আসন। ভোট শতাংশের হারে চোখ রাখলে চিত্রটা আরও পরিষ্কার হবে।
বিজেপি পেয়েছে ৩৩.৩১ শতাংশ ভোট। আর ২৩.৪১ শতাংশ ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে। তৃণমূল পেয়েছে ৫.২১ শতাংশ ভোট। তাদের শরিক ৭.৬০%। ৬.৭৭ শতাংশ ভোট আপের। এবার বিরোধীদের ভোট একত্র করলে হয় ১৯.৫৮ শতাংশ। আর বিজেপি ও কংগ্রেসের ভোটের হারে ফারাক ৯.৮৫ শতাংশ। শুধু আপ ও তৃণমূলের ভোট যোগ করলে হয় ১১.৯৮%। শতাংশের হারে স্পষ্ট বিরোধী শিবিরের ভোট ভাগ না হলে বিজেপির পক্ষে গোয়ায় জেতা কঠিন ছিল। যদিও ভোটের ফল পাটিগণিতের সহজপাঠে চলে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আপ বা তৃণমূল লড়াইয়ে না থাকলে কে বলতে পারে বিরোধী ভোটের ওই অংশ যেত কংগ্রেসের ঝুলিতে।
ভোট ভাগাভাগিতে তাদের যে লোকসান হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। বলেন,'গোয়ায় কংগ্রেসের ক্ষতি করেছে তৃণমূল ও স্থানীয় দলগুলি। এতে বিজেপির লাভ হয়েছে। বিজেপির হারার সম্ভাবনা প্রবল ছিল। কিন্তু মোদীকে খুশি করতে ওখানে গিয়েছিলেন দিদি।'
গোয়ায় ৪০টি আসনের মধ্যে ২৬ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। বাকি আসনে এমজেপি। কম আসনে লড়ে বেশি আসন পেয়েছে তারা। ভোট শতাংশের হারও বেশি। গোয়ায় তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হয়ে হেরেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চার্চিল আলেমা। সংবাদমাধ্যমে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন,'আমরা গোয়ায় নতুন পা দিয়েছি। সামান্য সময়ে মানুষকে প্রতীক চেনানোই ছিল বিরাট ব্যাপার। সেটা সন্তোষজনকভাবে হয়েছে।' গোয়া তৃণমূলের তরফে টুইট করা হয়েছে,'অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে আমরা এই জনাদেশ গ্রহণ করছি। গোয়ানদের বিশ্বাস এবং ভালবাসা অর্জনের জন্য আরও কঠোর পরিশ্রম করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমরা। যত সময়ই লাগুক না কেন, এখানেই থাকব এবং গোয়ার মানুষের সেবা করব।'
গোয়ায় এবারের তৃণমূলের যাবতীয় রণকৌশল সাজিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলকে দাঁড় করাতে চেষ্টার কসুর করেননি। তবে সাফল্য পেলেন না। প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার সময় পর্যন্ত অভিষেকের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া বা টুইট মেলেনি।