শনিবার রাতে পাকিস্তানের ঝিলাম জেলায় গুলিবর্ষণের ঘটনায় ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি আবু কাতালের মৃত্যু হয়েছে। হামলায় তার এক নিরাপত্তারক্ষীও নিহত হয়েছে। এবং আরেকজন গুরুতর আহত হয়েছে।
হামলার বিস্তারিত
শনিবার রাতে ঝিলামের দিনা এলাকায় পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এই হামলা ঘটে। সূত্র অনুযায়ী, আবু কাতাল জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার সদস্যদের সঙ্গে কনভয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারীরা নির্বিচারে গুলি চালায়।
পাক সেনার নীরব ভূমিকা
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঘটনাস্থলে থাকা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যরা হামলা ঠেকাতে কোনও সক্রিয় ভূমিকা নেয়নি। এমনকি, আবু কাতালকে কঠোর নিরাপত্তা দেওয়া সত্ত্বেও তিনি হামলার শিকার হন।
আবু কাতালের পরিচয় ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড
আবু কাতালের আসল নাম জিয়া উর রহমান ওরফে কাতাল সিন্ধি। তিনি লস্কর-ই-তৈবার শীর্ষ হ্যান্ডলারদের একজন ছিলেন এবং কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ২৬/১১ মুম্বাই হামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী হাফিজ সাঈদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।
রাজৌরি ও রিয়াসি হামলার যোগসূত্র
জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-র চার্জশিটে আবু কাতালের নাম উল্লেখ ছিল। ২০২৩ সালের রাজৌরি হামলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। ওই হামলায় সাতজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। একই বছর রিয়াসি হামলাতেও তিনি যুক্ত ছিলেন, যেখানে তীর্থযাত্রীদের বাসে হামলা চালানো হয়। তার নেতৃত্বে লস্কর-ই-তৈবা দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল এবং কাশ্মীরে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল।
নিয়োগ ও লজিস্টিক সহায়তা
আবু কাতাল শুধু জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করতেন না, তিনি পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশকারী জঙ্গিদের জন্য লজিস্টিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করতেন। রাজৌরি ও রিয়াসি হামলার পরও ধাঙ্গরিতে জঙ্গিদের তিন মাস ধরে আশ্রয় ও খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি।
পরিস্থিতির বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানে থাকা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক হামলা প্রমাণ করছে যে, সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এদিকে, পাকিস্তান সরকারের নীরবতা ও সেনাবাহিনীর নিষ্ক্রিয়তাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।