NRC ইস্যুতে তুঙ্গে রাজনৈতিক সংঘাত। 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙালিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন', সরাসরি অভিযোগ তুললেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তাঁর দাবি, এনআরসি নিয়ে কোনও সরকারি ঘোষণা হয়নি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভয় দেখাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের জনসভা থেকে NRC ইস্যুতে মমতা জানান, 'আমাদের শপথ এনআরসি করতে দিচ্ছি না, দেব না। অসম থেকে এনআরসি নোটিস পাঠাচ্ছেন, সাহস তো কম নয়! নোটিস পাঠালে কেউ যাবেন না। আমরা এখান থেকে আইনজীবী দিয়ে লড়িয়ে নেব। বাংলায় থাকুন, শান্তিতে থাকুন।'
এদিন গুয়াহাটিতে সাংবাদিক বৈঠকে পাল্টা কটাক্ষ করেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি বলেন, 'হঠাৎ উনি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বলছেন, আমি এনআরসি মানব না। কে এনআরসি-র নির্দেশ দিয়েছে? বিগত পাঁচ বছরে উনি এনআরসি নিয়ে কিছু বলেননি। হঠাৎ এখন এইসব কথা তুলছেন কেন?'
অসমের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ, 'বাঙালিদের মধ্যে ভয় তৈরি করে ভোট নেওয়াই ওঁর কৌশল। গত ৫ বছরে এনআরসি নিয়ে কথা বলেননি, এখন নির্বাচন আসছে বলে উনি এই ইস্যু তুলছেন।'
গত কয়েক সপ্তাহ জুড়েই বাঙালি অস্মিতাকে হাতিয়ার করে আসরে নেমেছে তৃণমূল। অসম থেকে নোটিস, ভিনরাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের হয়রানি অভিযোগ তুলে তোপ দেগেছেন TMC নেতারা। এদিন হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের জয়প্রকাশ মজুমদারের পাল্টা বক্তব্য, 'আগে নিজেদের মধ্যে ঠিক করুক। শুভেন্দু অধিকারী বলছেন এনআরসি হচ্ছে, হবে। আবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন বাংলায় এনআরসি হচ্ছে না। তাহলে আসল সত্যিটা কী?'
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, 'অসম থেকে বারবার বাংলার বাসিন্দাদের এনআরসি নোটিস পাঠানো হচ্ছে কেন? পিছনের দরজা দিয়ে সিএএ ও এনআরসি দুই অস্ত্র ব্যবহার করে বাংলার সাধারণ, গরিব মানুষকে দেশছাড়া করার পরিকল্পনা চলছে। শুধু ক্ষমতায় থাকা আর ভোট জেতাই এদের লক্ষ্য।'
রাজনৈতিক মহলের মতে, ক্রমেই বাঙালি অস্মিতা ও NRC বড় ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনে এই দুই বিষয়ই ফের রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।