তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। স্ট্যালিন বলেছেন, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার কখনই 'হিন্দি হার্টল্যান্ড' ছিল না এবং হিন্দি ভাষা বহু আঞ্চলিক ভাষাকে গ্রাস করেছে। এই মন্তব্যের কড়া বিরোধিতা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
স্ট্যালিনের মন্তব্যের বিরোধিতা করে বৈষ্ণব এক্স-এ (প্রাক্তন টুইটার) লিখেছেন, 'সমাজকে বিভক্ত করার এমন প্রচেষ্টা দিয়ে অপশাসনকে কখনও আড়াল করা যায় না। জানতে ইচ্ছা করে, এই বিষয়ে বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী কী বলেন। তিনি কি হিন্দি-ভাষী আসনের সাংসদ হিসেবে একমত?'
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন একটি পোস্টে বলেন, হিন্দি বহু আঞ্চলিক ভাষাকে গ্রাস করেছে। তিনি বলেন, 'উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার কখনোই শুধুমাত্র 'হিন্দি প্রদেশ' ছিল না। তাদের প্রকৃত ভাষাগুলি এখন অতীতের অবশিষ্টাংশ হয়ে পড়েছে।' স্টালিন আরও বলেন, 'তামিলনাড়ু এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় কারণ আমরা জানি এর শেষ কোথায় হতে পারে। তামিল জাতি জেগে আছে, তাদের সংস্কৃতি টিকে আছে। অন্য অনেক ভাষা হিন্দিকে জায়গা ছেড়ে দিয়েছে, ফলে তারা কোনও চিহ্ন ছাড়াই হারিয়ে গেছে।'
স্ট্যালিন তার পোস্টে উল্লেখ করেন যে বহু ভারতীয় ভাষা এখন অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। তিনি বলেন, 'ভোজপুরী, মৈথিলী, অবধী, ব্রজ, বুন্দেলী, গড়োয়ালি, কুমায়ুনি, মগহী, মারোয়ারি, মালভি, ছত্তিশগড়ি, সাঁওতালি, আঙ্গিকা, খরিয়া, খোরঠা, কুরমালি, কুরুখ, মুন্ডারি এবং আরও অনেক ভাষা এখন টিকে থাকার জন্য লড়াই করছে। একটি একক হিন্দি পরিচয় তৈরির চেষ্টাই এই প্রাচীন মাতৃভাষাগুলিকে ধ্বংস করছে।'
স্ট্যালিন আরও দাবি করেন যে, হিন্দি ভাষার আধিপত্যের কারণে উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং মধ্যপ্রদেশের বহু আঞ্চলিক ভাষা ধ্বংসের মুখে। তিনি জানান, দক্ষিণ ভারতের দ্রাবিড় আন্দোলনের মাধ্যমে তামিল ভাষা এবং সংস্কৃতি সংরক্ষিত হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষানীতির (NEP) বিরোধিতা করেও মুখ খুলেছেন স্ট্যালিন। তার অভিযোগ, কেন্দ্র সরকারের শিক্ষা নীতির মাধ্যমে হিন্দি এবং সংস্কৃত ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, 'ত্রিভাষা নীতির অজুহাতে শুধুমাত্র সংস্কৃত ভাষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি-শাসিত রাজস্থান উর্দু শিক্ষকের পরিবর্তে সংস্কৃত শিক্ষকদের নিয়োগ করছে।' স্ট্যালিন দাবি করেন, তামিলনাড়ু যদি ত্রিভাষা নীতি গ্রহণ করে, তবে ভবিষ্যতে মাতৃভাষাকে অবহেলা করা হবে এবং সংস্কৃত ভাষার আধিপত্য বৃদ্ধি পাবে।