তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদে ঘটেছে এক চরম মর্মান্তিক ও নারকীয় ঘটনা। এক প্রাক্তন সেনাকর্মী তার স্ত্রীকে খুন করার পর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলে এবং শরীরের কিছু অংশ প্রেসার কুকারে সেদ্ধ করার কথা স্বীকার করেছে। এই ঘটনা স্তম্ভিত করেছে গোটা দেশ।
ঘটনার সূত্রপাত
৩৫ বছর বয়সী ভেঙ্কট মাধবীকে ১৫ জানুয়ারি শেষবার জিলেলাগুদার বাড়িতে দেখা গিয়েছিল। ১৮ জানুয়ারি মাধবীর বাবা-মা মীরপেট থানায় নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করেন। তবে ঘটনা মোড় নেয় সিসিটিভি ফুটেজের পর। সেখানে দেখা যায়, ১৫ জানুয়ারির পর মাধবী আর বাড়ি থেকে বের হননি। সন্দেহজনক আচরণের কারণে তার স্বামী গুরুমূর্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে।
স্বামীর স্বীকারোক্তি
জিজ্ঞাসাবাদের সময় গুরুমূর্তি স্বীকার করে, ১৬ জানুয়ারি এক তর্কের সময় সে মাধবীকে মেরে ফেলে। পরে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার জন্য স্ত্রীর মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে। কিছু অংশ প্রেসার কুকারে সেদ্ধ করার পর, দেহের অন্যান্য অংশ ব্যাগে ভরে চন্দন লেকে ফেলে দেয়।
গুরুমূর্তি, যিনি মূলত প্রকাশম জেলার বাসিন্দা এবং কাঞ্চনবাগে নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করতেন, দাবি করেছেন যে মাধবী তাঁর জন্মস্থান নান্দিয়ালে যেতে চাইলে তিনি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে এই জঘন্য অপরাধ ঘটান।
তদন্তের প্রক্রিয়া ও গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ
মামলাটি প্রথমে নিখোঁজ ব্যক্তির অভিযোগ হিসেবে নথিভুক্ত হলেও, গুরুমূর্তির স্বীকারোক্তির পর সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল থেকে চুলা, ছুরি, রোলার, এবং ফিনাইল বোতলসহ অন্যান্য প্রমাণ জব্দ করেছে।
তেলেঙ্গানা পুলিশ এই তদন্তে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। পুলিশ কমিশনার জি সুধীর বাবু এবং এলবি নগর জোনের ডিসিপি সিএইচ প্রবীণ কুমারের নেতৃত্বে মীরপেট পুলিশের তৎপরতায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। ইন্সপেক্টর কে নাগারাজু এবং সাব-ইন্সপেক্টর কে সুধাকর তাদের বিস্তারিত তদন্তের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন।
অভিযোগ ও শাস্তি
গুরুমূর্তির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১০৩(১), ২৩৮ এবং ৮৫ ধারায় মামলা করা হয়েছে। এই নারকীয় অপরাধ নিয়ে সমগ্র সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।