অযোধ্যায় চলছে রাম মন্দির নির্মাণের কাজ। ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এমতাবস্থায় সকলের চোখ স্থির রামলালার প্রতিমার দিকে। ভক্তরা জনমূর্তি রূপের দর্শন পেতে আগ্রহী। বলা হচ্ছে, রাম মন্দিরে যে রামলালার মূর্তি স্থাপন করা হবে তা হবে বিশ্বের সবচেয়ে অনন্য মূর্তি। রামলালার এই মূর্তিটি হবে শিশু আকারের। রাম নবমীর দিন সূর্যের রশ্মি তাঁর উপর পড়বে। সূর্যের কিরণ রামলালার কপালে পড়লে দৃশ্যটি খুব আশ্চর্যজনক হবে। রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। তাঁরা জানান, কীভাবে বৈজ্ঞানিকভাবে মন্দিরের পুরো কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে রাজস্থানে রামলালার শিশুরূপের মূর্তি তৈরি হচ্ছে। রামলালার এই মূর্তি স্থাবর, এতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে। এই মূর্তিটি ৫১ ইঞ্চি লম্বা হবে। রামলালা ছাড়াও শ্রী হরির ১০টি অবতারের মূর্তিও থাকবে।
রামলালার শিশুরূপের মূর্তি একই জায়গায় থাকবে, যা গর্ভগৃহে থাকবে এবং যার দর্শন রামভক্তরা দেখতে পাবেন। যেখানে আরেকটি মূর্তির উচ্চতা হবে প্রায় ৭ ফুট। উৎসবের সময় শুধু এই মূর্তি শোভাযাত্রায় বের করা যাবে। রাম মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র মিশ্র বলেছেন যে একটি সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা মন্দিরের চূড়ায় স্থাপন করা হবে। এ কারণে প্রতি বছর রাম নবমীর দিনে সূর্যের কিরণ কিছু সময়ের জন্য ভগবান রামের কপালে পড়বে।
এমনই হবে অযোধ্যার রাম মন্দির
আপনাদের জানিয়ে রাখি রাম জন্মভূমি এলাকায় ২.৭ একর জমিতে তৈরি হচ্ছে রাম মন্দির। এটি হবে তিনতলা এবং এর উচ্চতা হবে ১৬২ ফুট। মন্দির নির্মাণের জন্য রাজস্থান থেকে খোদাই করা পাথর আনা হয়েছে। আট একর পরিধিতে মন্দিরের চারপাশে একটি ৪৮ ফুট উঁচু প্রাচীরও তৈরি করা হচ্ছে। রাম মন্দির ছাড়াও মন্দির চত্বরে আরও ছয়টি মন্দির তৈরি হচ্ছে। সিং গেট থেকে রাম মন্দিরে প্রবেশের আগে পূর্ব দিকে একটি প্রধান ফটক থাকবে, যেখান দিয়েই ভক্তরা কমপ্লেক্সে প্রবেশ করবেন। মূল ফটকের পাশে একটি এক্সিট গেটও তৈরি করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি একটি টানেলও তৈরি করা হচ্ছে, যেখান থেকে ভক্তরা আসা-যাওয়া করতে পারবেন।
পুজোর আগে কমপ্লেক্সের মূল ফটক নির্মাণ করা হবে
মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বার হবে 'সিংহদ্বার'। রাম মন্দিরে মোট ৩৯২টি স্তম্ভ থাকবে। গর্ভগৃহে ১৬০টি স্তম্ভ এবং উপরের তলায় ১৩২টি স্তম্ভ থাকবে। মন্দিরে ১২টি ফটক থাকবে। সেগুন কাঠ দিয়ে এগুলো তৈরি করা হচ্ছে। সিংহ গেট দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করলেই সামনে নাচের মণ্ডপ, রঙের মণ্ডপ এবং গুপ্ত মণ্ডপও দেখতে পাবেন। মন্দির চত্বরে তৈরি হচ্ছে সূর্যদেব, ভগবান বিষ্ণু ও পঞ্চদেব মন্দিরও। পুজোর পর মন্দিরটি যখন সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে, তখন প্রতিদিন দেড় লাখ ভক্তের সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাই রামলালার দর্শনের জন্য প্রত্যেক ভক্ত মাত্র ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ড সময় পাবেন।
২২ জানুয়ারি প্রাণ প্রতিষ্ঠা
এটি উল্লেখযোগ্য যে রাম মন্দিরে ভগবান রামলালার প্রাণ প্রতিষ্টা ২২ জানুয়ারি অভিজিৎ মুহুর্ত মৃগাশিরা নক্ষত্রে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের হাতে ঈশ্বরের জীবন পবিত্র করবেন। এই অনুষ্ঠানকে জমকালো করতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।