
জম্মু-কাশ্মীরের সোপিয়ান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইরফান আহমেদ ওয়াগা নামে এক ইমামকে। সোমবার ফরিদাবাদে বিস্ফোরক উদ্ধার এবং দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের পর মঙ্গলবারই পুলিশের জালে ধরা পড়ে এই ইমাম। কাউন্টার ইন্টালিজেন্স কাশ্মীর (CIK) এবং শ্রীনগর পুলিশ গ্রেফতার করেছে তার স্ত্রীকেও। তল্লাশি চালানো হয়েছে তাদের বাড়িতে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, ডাক্তারদের রিক্রুট করে মৌলবাদের পাঠ পড়াত এই ইমাম ও তার স্ত্রী। ফরিদাবাদ মডিউলের যে সমস্ত ডাক্তাররা এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে, জানা গিয়েছে, তাদের সকলকেই মৌলবাদের শিক্ষা দিয়েছে এই ইমাম।
ইরফান আহমেদ ওয়াগা নিজে আগে ছিল প্যারামেডিক্যাল স্টাফ। শ্রীনগরের একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কাজ করত সে। নওগাঁওয়ের ইমামও ছিল। অথচ সেই পেশার আড়ালেই সম্প্রতি ডাক্তারদের ফুঁসলিয়ে সন্ত্রাসবাদের পথে টেনে আনার কাজ করছিল এই ইমাম।
জানা গিয়েছে, ফরিদাবাদ মডিউলের ডা: শাহিম শহিদকে মৌলবাদের পাঠ পড়িয়েছিল ইমামের স্ত্রী। এরপরই জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। আর সেই তথ্য মিলেছে ইমাম ও তার স্ত্রীয়ের মোবাইল ফোন থেকে। রিক্রুটমেন্ট এবং চরমপন্থী কার্যকলাপ নিয়ে সমস্ত মেসেজ আদানপ্রদান হয় সেখানে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ অক্টোবর নওগাঁওয়ের বানপোরা এলাকায় জইশ-ই-মহম্মদের নামে পড়েছিল পোস্টার। তারপর থেকেই স্ক্যানারে ছিলেন ধৃত ইমাম। জানা গিয়েছে, ওই পোস্টার লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিল সে-ই।
তদন্তে উঠে এসেছে ডা: মুজাম্মিল শাকিলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ইরফান আহমেদ ওয়াগার। যোগাযোগ রাখত ডা: মহম্মদ উমরের সঙ্গেও। যে ব্যক্তি লালকেল্লা ব্লাস্ট ঘটিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। যে ঘর থেকে ডা: মুজাম্মিল শাকিল বোমা তৈরির সরঞ্জাম বানাচ্ছিলেন এবং যেখান থেকে সমস্ত পরিকল্পনা ফাঁদা হচ্ছিল, তা-ও ইমামের বলেই জানা গিয়েছে।
এই ভাবে চিকিৎসকদের টেনে জঙ্গি সংগঠনে নিয়ে আসা এবং তাদের জিহাদের পাঠ পড়ানোকেই 'হোয়াইট কলার টেররিজম' বলা হচ্ছে। ইমাম কাশ্মীরে বসেসেই কাজই করছিল বলে অনুমান তদন্তকারীদের। চরমপন্থী সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রভাবিত করছিল চিকিৎসকদের। ধর্মীয় ও চিকিৎসা পেশার আড়ালে এভাবেই চলছিল 'হোয়াইট কলার টেররিজম'। ভারতের নানা শহরে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারকে অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে নিকেশ করার বদলা নিতেই এই অভিযান বলে মনে করা হচ্ছে। ইমামের গ্রেফতারির পর দুইয়ে দুইয়ে চার করছেন তদন্তকারীরা।