রচিত হল ইতিহাস। এই প্রথম তালিবান বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা ভারতের বিদেশমন্ত্রীর। এক নয়া অধ্যায়ের সূচনা করলেন এস জয়শঙ্কর। বৃহস্পতিবার তিনি কথা বললেন তালিবানের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে। তালিবান প্রশাসনের সঙ্গে ফোনে বার্তালাপ ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম।
সোশ্যাল মিডিয়াতে আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে তাঁর কী নিয়ে কথা হয়েছে তাও জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী।
কেন এই ফোনলাপ তাৎপর্যপূর্ণ?
আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করলেও তালিবান সরকারকে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি নয়াদিল্লি। তবে পহেলগাঁও হামলার পরেই একটি বিবৃতি দেওয়া হয় তালিবানের তরফে। ওই হামলার তীব্র নিন্দা করে আফগানিস্তানের তালিব সরকার। জয়শঙ্করও তালিবানের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রীর কাছে এর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
কী জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী?
মুত্তাফির সঙ্গে কথা বলার পরেই সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ একটি পোস্ট করেন জয়শঙ্কর। তিনি লিখেছেন, ‘আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী মৌলভী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে সদর্থক আলোচনা হয়েছে। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার নিন্দা জানানোর জন্য আমরা তাঁর কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদনের মাধ্যমে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিলও বলেও উল্লেখ করেন জয়শঙ্কর। তবে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। দুই দেশের মধ্য আগামী দিনে সম্পর্ক দৃঢ় করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
কী জানাল আফগানিস্তান ?
মুত্তাকি এবং জয়শঙ্করের মধ্যে আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানান তালিবানের যোগাযোগ বিভাগের ডিরেক্টর হাফিজ জিয়া আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, মুত্তাকি টেলিফোনে কথা বলার সময়ে জয়শঙ্করকে আফগান নাগরিকদের, বিশেষ করে যাঁরা চিকিৎসা পরিষেবা নিতে চান তাঁদের জন্য আরও ভিসা প্রদানের অনুরোধ জানান। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ভারতীয় কারাগারে থাকা আফগান বন্দিদের মুক্তি ও প্রত্যাবর্তন এবং ইরানের চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাফিজ জিয়া আহমেদ।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রচেষ্টা আসলে পাকিস্তানকে ঘুরপথে বার্তা দেওয়া।