পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর কেন্দ্রীয় সরকার কড়া অবস্থান নিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA) সব পাকিস্তানির ভিসা বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে। দেশের প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নির্দেশ দিয়েছেন, যে সব পাকিস্তানি নাগরিক বর্তমানে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে রয়েছে, তাঁদের চিহ্নিত করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় পর্যটকদের উপর হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন বাইরের রাজ্য থেকে আসা। এই হামলার দায় নিয়েছে পাকিস্তানপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী 'দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট' (TRF)। এর পরই ভারত সরকার পরপর একাধিক কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করে।
কী বলেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনওরকম আপোস করা হবে না। যে সব পাকিস্তানি নাগরিক চিকিৎসা, দর্শন বা আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য ভারতে এসেছে, তাদের ভিসা অবিলম্বে বাতিল করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে নতুন করে পাকিস্তানিদের আর কোনও ভিসা ইস্যু করা হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
রাজ্যগুলিকে কী বললেন অমিত শাহ?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন দ্রুত সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিকদের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রকে জানানো হয়। কোথায়, কার ভিসা আছে, কতদিনের জন্য এসেছে, এসব তথ্য সংগ্রহ করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
কেন এত কড়া পদক্ষেপ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, পহেলগাঁও হামলার পর এটা পরিষ্কার যে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলোর কার্যকলাপ এখনও বন্ধ হয়নি। অতীতে ভারতের পক্ষ থেকে একাধিকবার পাকিস্তানের কাছে দাবি করা হয়েছিল, যেন তারা সন্ত্রাস দমন করে। কিন্তু কার্যত তাতে কোনও লাভ হয়নি। সেই কারণেই এবার সরাসরি কূটনৈতিক এবং প্রশাসনিক স্তরে চাপ বাড়াচ্ছে ভারত।
পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে আরও সিদ্ধান্ত
সিন্ধু জলচুক্তি (Indus Waters Treaty) স্থগিত করা হয়েছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক আলোচনা স্থগিত।
পাকিস্তানি নাগরিকদের উপর ভবিষ্যতে কোনওরকম তথ্য আদান-প্রদান বা সীমান্ত সফরের অনুমতি দেওয়া হবে না।
কী প্রভাব পড়বে এই সিদ্ধান্তে?
এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়াবে। পাশাপাশি, ভারতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আরও কড়াকড়ি হবে। দেশে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ঘিরে যদি কোনও সন্দেহ থাকে, তাও খতিয়ে দেখা হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই কড়া পদক্ষেপে সন্ত্রাসবাদ রোখার পাশাপাশি, পাকিস্তানের উপর আন্তর্জাতিক স্তরেও চাপ বাড়াতে পারবে ভারত।