পাকিস্তানে ঢুকে 'অপারেশন সিঁদুর'-এর একমাস পূর্তি। একমাস আগে ৬-৭ মে রাতে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি গুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এই অভিযান ভারতের সামরিক শক্তি এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার প্রতীক। 'অপারেশন সিঁদুর' পাকিস্তানের জন্য লজ্জাজনক পরাজয়।
ভারত ২৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে। ১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে সিন্ধু নদীর জল ভাগ করে দেওয়া হয়। পহেলগাঁওতে ২৬ জন নিরীহ মানুষের আক্রমণের পর ভারত এই পদক্ষেপ নেয়। পাকিস্তান আগে ৮০% জল পেত সিন্ধু থেকে। এর পরে পাকিস্তানে জলের ঘাটতি দেখা দেয়।
অপারেশন সিঁদুর- কখন ও কীভাবে?
২২ এপ্রিল ২০২৫-এ, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদীরা ২৬ জন (২৫ জন ভারতীয় এবং ১ জন নেপালি) নাগরিককে হত্যা করা হয়। এতে সন্ত্রাসবাদীরা হিন্দু পুরুষদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। ভারত এই হামলার জন্য লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি), জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম) এবং দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) কে দায়ী করেছে। ভারত বলেছে এই সন্ত্রাসবাদীরা পাকিস্তানের সহায়তায় কাজ করে, যা ইসলামাবাদ অস্বীকার করেছে।
এই আক্রমণের জবাবে, ভারত ২০২৫ সালের ৬-৭ মে রাত ১টা ০৫ থেকে দেড়টা পর্যন্ত অপারেশন সিঁদুর শুরু করে। ২০১৬ সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং ২০১৯ সালের বালাকোট বিমান হামলার পর এই অভিযানটি ছিল তৃতীয় বড় আক্রমণ।
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ত্রি-সেনা অভিযানের (সেনা, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী) আওতায় ৯টি জঙ্গিঘাঁটিতে ২৪টি করে। মাত্র ২৫ মিনিটের মধ্যে এই অভিযান সম্পন্ন হয়।
ভারতের টার্গেট
পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) ৫টি অবস্থান: মসজিদ সৈয়দনা বিলাল (মুজাফফরাবাদ), গুলপুর প্রশিক্ষণ ক্যাম্প (কোটলি), সাওয়াই নালা ক্যাম্প (মুজাফফরাবাদ), মসজিদ আহলে-ই-হাদিস (বারনালা, ভিম্বার) এবং অন্য একটি।
এছাড়া, পঞ্জাব, পাকিস্তানের ৪টি অবস্থান: সরজাল ক্যাম্প (শিয়ালকোট), মেহমুনা জোয়া (শিয়ালকোট), মারকাজ তৈয়বা (মুরিদকে), মসজিদ সুবহান আল্লাহ (বাহওয়ালপুর)।
কী কী হাতিয়ার ব্যবহার করেছিল ভারতীয় সেনা? রাফালে জেট থেকে SCALP ক্রুজ মিসাইল এবং AASM হ্যামার বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল। ব্রহ্মোস ক্রুজ মিসাইল এবং ইন্দো-ইসরায়েলি স্কাইস্ট্রাইকা আত্মঘাতী ড্রোন), ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক্সক্যালিবার প্রিসিশন রাউন্ড-সহ কামান ব্যবহার করেছে সেনা। S-400 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাকিস্তানি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে মাঝ আকাশেই ধ্বংস করে দেয়। লোয়ারিং গোলাবারুদ সঠিকভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। নিহত হয়েছে ১০০ জনেরও বেশি সন্ত্রাসবাদী।
ভারত বলেছে, এই আক্রমণটি সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামোর উপর ছিল, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বা বেসামরিক নাগরিকদের উপর নয়। উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং বলেছিলেন, সাধারণ নাগরিক এবং সামরিক স্থাপনাগুলিকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছি।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া এবং ক্ষয়ক্ষতি
পাকিস্তান অপারেশন সিঁদুরকে 'যুদ্ধের কাজ' বলে অভিহিত করে। পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ছিল।