কমান্ড অথরিটির বৈঠক ডাকলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ভারতের প্রত্যাঘাতের প্রেক্ষাপটের এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। সূত্রের খবর, শ্রীনগর এবং আশপাশের এলাকায় পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। সেনাবাহিনীর তরফে ওই এলাকায় মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম অ্যাকটিভেট করা হয়েছে।
জম্মুর পারগওয়াল সেক্টরে পাকিস্তান বিনা প্ররোচানায় হঠাৎ গোলাগুলি চালানো শুরু করে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর 'চেনাব গ্যাপে' শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ পাকিস্তান হামিরপুর কোণা ও আশপাশের গ্রামগুলির সাধারণ মানুষ ও ভারতীয় সেনা জওয়ানদের লক্ষ করে গুলি চালায়। পরে পাকিস্তান মর্টারের মতো উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্রও ব্যবহার করে। ভারতের বিরুদ্ধে অভিযানের পোশাকি নাম-ও দিয়েছে পাকিস্তান সেনা। এর নাম ‘অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুস’। এই আরবি শব্দগুচ্ছের আক্ষরিক অর্থ 'সীসা দিয়ে গাঁথা একটি সুদৃঢ় প্রাচীর'।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ধৈর্য্য ধরে ডিফেন্সিভ থাকলেও পাকিস্তান ক্রমাগত হামলা করতেই থাকে। এমন পরিস্থিতিতে পাল্টা জবাব দেওয়া হয়। পারগওয়াল সেক্টরে ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাকিস্তানের সেনা জওয়ানদের ছত্রভঙ্গ অবস্থায় পালাতে দেখা গিয়েছে। পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও আসেনি।
ভারত-পাকিস্তান এই তপ্ত পরিস্থিতিতে দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে সরাসরি কোনও কথোপকথন হয়নি বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স (ISPR)-এর ডিরেক্টর জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী এই কথা জানান। এক সাংবাদিকের প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমি হলফ করে বলতে পারি, ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে কোনও সরাসরি যোগাযোগ হয়নি।'
যখন সাংবাদিকরা বিদেশমন্ত্রী ইশহাক দারের মন্তব্যের প্রসঙ্গ তোলেন, তখন আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানান, কোনওরকম পরোক্ষ যোগাযোগ যদি হয়েও থাকে, তা বিদেশ মন্ত্রকের আওতায় পড়ে। তারাই এ নিয়ে মন্তব্য করতে পারেন।
এমতাবস্থায় সীমান্তের কাছে পাকিস্তান সেনা মোতায়েন করেছে। ভারতীয় সেনা শ্রীনগর অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় রেখেছে। সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যাচ্ছে, সীমান্তে পাকিস্তান বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। ফলে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়াই একমাত্র পথ।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে পাকিস্তান লাগাতার ভারতের বিভিন্ন অংশে হামলা চালাচ্ছে। ভারতীয় বায়ুসেনা সেগুলি সফলভাবে রুখে দিয়েছে। সূত্রের খবর, পাকিস্তান ভারতের উপর 'ফতেহ-১' ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল। তবে ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সেই ক্ষেপণাস্ত্র মাঝ আকাশেই ধ্বংস করে।
এদিকে, পঞ্জাবের জলন্ধরের কাংনিওয়াল গ্রামে একটি পাকিস্তানি ড্রোনের অংশ পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের পর ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। সেই দৃশ্যের ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধের আবহ স্পষ্ট। দুই দেশের মধ্যে সরাসরি কূটনৈতিক যোগাযোগ না থাকায় উদ্বেগ আরও বাড়ছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে আন্তর্জাতিক মহলও।