পাক অধিকৃত কাশ্মীর খালি করুক পাকিস্তান। কাশ্মীর নিয়ে কোনও তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা থাকবে না। ভারত-পাক সাম্প্রতিক উত্তেজনার আবহে এবার কাশ্মীর প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল ভারত। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন যে, পাকিস্তানের উচিত বেআইনি ভাবে দখল করে রাখা পাক অধিকৃত কাশ্মীর খালি করে দেওয়া। তিনি এ-ও বলেন যে, জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে যে কোনও সমস্যা শুধুমাত্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ভাবে সমাধান করতে হবে। এতে তৃতীয় কোনও পক্ষের ভূমিকা থাকবে না।
প্রসঙ্গত, কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারত-পাক সম্পর্ক বরাবরই তেতে থাকে। সম্প্রতি পহেলগাঁও হামলা এবং তার পরবর্তীতে ভারতের অপারেশন সিঁদুর অভিযানের জেরে দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়। গত শনিবার থেকে ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতি শুরু হয়। এই প্রেক্ষাপটে পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে ভারতের এহেন বার্তা উল্লেখযোগ্য।
অন্য দিকে, ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতির কথা শনিবার প্রথম এক্স হ্যান্ডলে দাবি করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে 'তৃতীয় পক্ষের কোনও ভূমিকা থাকবে না' বলে মন্তব্য আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় ২৫ জন পর্যটক ও এক কাশ্মীরির মৃত্যুতে ফুঁসে ওঠে গোটা দেশ। তার পরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক স্তরে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। জঙ্গি হামলার বদলা নেওয়ার দাবি ওঠে গোটা দেশে। গত বুধবার মধ্যরাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দেয় ভারত। যে অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন সিঁদুর।
ভারতের এই অভিযানে পর্যদুস্ত হয় পাকিস্তান। তার পরই সীমান্ত ঘেঁষা ভারতের একাধিক শহরকে নিশানা করে হামলা চালানোর চেষ্টা করে পাকিস্তান। কিন্তু ইসলামাবাদের সব চক্রান্ত বানচাল করে মোক্ষম জবাব দেয় ভারত। এই পরিস্থিতিতে শনিবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী বিকেলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন যে, ভারত ও পাক সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে। তার পর পরই বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয়, পাকিস্তানের আবেদনে সাড়া দিয়ে সংঘর্ষ বিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত। সোবার রাত ৮টায় জাতীর উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাফ জানিয়েছেন, পাকিস্তানের কার্যকলাপের উপর সর্বদা নজর রাখা হবে। নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল ভারত সহ্য করবে না। পাশাপাশি, মোদী এ-ও জানিয়েছেন, পাকিস্তান আলোচনার টেবিলে এলে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং সন্ত্রাসবাদ নিয়েই কথা বলতে হবে।