Advertisement

India Population: জনসংখ্যা বাড়ছে, তারপরও মহিলাদের একাধিক সন্তান নেওয়ার আর্জি RSS প্রধানের, জানুন কেন

এতদিন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথাই বলা হত। কিন্তু ক্রমেই দেখা যাচ্ছে হঠাৎ করে জন্ম নিয়ন্ত্রণের প্রভাবও ভাল নয়। কোনও দেশের বিপুল জনসংখ্যাই তার অর্থনীতি, সমাজের ভিত। চিনের মতো দেশে হঠাৎ জনসংখ্যা হ্রাসের খারাপ প্রভাব পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতেও অনেকে মা-বাবাদের একাধিক সন্তানের পরামর্শ দিচ্ছেন। এবার সেই একই পরামর্শ দিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভগবত।

কেন জন্মহার বাড়াতে বলছেন আরএসএস প্রধান?কেন জন্মহার বাড়াতে বলছেন আরএসএস প্রধান?
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 03 Dec 2024,
  • अपडेटेड 8:33 AM IST

এতদিন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথাই বলা হত। কিন্তু ক্রমেই দেখা যাচ্ছে হঠাৎ করে জন্ম নিয়ন্ত্রণের প্রভাবও ভাল নয়। কোনও দেশের বিপুল জনসংখ্যাই তার অর্থনীতি, সমাজের ভিত। চিনের মতো দেশে হঠাৎ জনসংখ্যা হ্রাসের খারাপ প্রভাব পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতেও অনেকে মা-বাবাদের একাধিক সন্তানের পরামর্শ দিচ্ছেন। এবার সেই একই পরামর্শ দিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভগবত। তিনি ক্রমেই কমতে থাকা জনসংখ্যাককে সমাজের জন্য উদ্বেগের বিষয় বলে উল্লেখ করেন।

রবিবার এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে মোহন ভগবত বলেন, 'একজন মহিলার উচিত তাঁর জীবনে অন্তত তিনটি সন্তানের জন্ম দেওয়া।' তিনি বলেন, 'কোনও সমাজের জন্মহার (ফার্টিলিটি রেট) 2.1-এর নিচে নেমে গেলে সমাজ আপনা-আপনিই শেষ হয়ে যায়।'

ভাগবত বলেন, 'ইতিমধ্যেই অনেক ভাষা ও সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তাই ফার্টিলিটি রেট 2.1 এর উপরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যদি এটি 2.1 এর নিচে নেমে যায় তাহলে সেই সমাজের বিলুপ্তির ঝুঁকি বেড়ে যায়।'

তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে জনসংখ্যা নীতি ১৯৯৮ বা ২০০২ সালে প্রণীত হয়েছিল। এতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে প্রজনন হার 2.1 এর নিচে হওয়া উচিত নয়। তাই প্রত্যেক দম্পতির অন্তত ৩টি সন্তান থাকা উচিত।'

জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা (NFHS-5) অনুসারে, ভারতের ফার্টিলিটি রেট 2.2 থেকে 2.0-এ নেমে এসেছে। মোট ফার্টিলিটি রেট মানে একজন মহিলা তাঁর জীবদ্দশায় কত সন্তানের জন্ম দিচ্ছে বা জন্ম দিতে পারে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিয়ম অনুযায়ী, প্রজনন হার 2.1 হওয়া উচিত।  

1990-92 সালে যখন প্রথমবারের মতো সমীক্ষা করা হয়েছিল, তখন দেশে প্রজনন হার ছিল 3.4। তার মানে ওই সময় একজন নারী গড়ে ৩টির বেশি সন্তানের জন্ম দিতেন। কিন্তু তারপর থেকে প্রজনন হার ক্রমাগত কমছে।

প্রজনন হার হ্রাসের প্রভাবে কোনও দেশে বয়স্কদের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। গত বছর UN-এর 'ইন্ডিয়া এজিং রিপোর্ট 2023' প্রকাশিত হয়েছিল। এই রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে 2050 সালের মধ্যে বয়স্করাই ভারতের জনসংখ্যার 20.8% হবে।

Advertisement

বয়স্ক মানে যাঁদের বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১০ সাল থেকে ভারতে বয়স্ক মানুষের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কারণে, জনসংখ্যায় ১৫ বছরের কম বয়সীদের অংশ হ্রাস পাচ্ছে এবং বয়স্কদের সংখ্যা বাড়ছে।

রিপোর্ট অনুসারে, ১ জুলাই, ২০২২ পর্যন্ত দেশে বয়স্ক মানুষের জনসংখ্যা ছিল ১৪.৯ কোটি। তখন জনসংখ্যায় বয়স্ক মানুষের অংশ ছিল ১০.৫ শতাংশ। কিন্তু ২০৫০ সাল নাগাদ ভারতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা ৩৪.৭ কোটি। এমনটা হলে সেই সময়ে ভারতের জনসংখ্যার ২০.৮ শতাংশ হবে বয়স্ক। যেখানে, এই শতাব্দীর শেষের দিকে অর্থাৎ ২১০০ সালের মধ্যে, ভারতের জনসংখ্যার ৩৬ শতাংশেরও বেশি বয়স্ক মানুষরাই থাকবেন।

নীতি আয়োগের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ১৯৫০-এর দশকে, ভারতে প্রত্যেক মহিলা গড়ে ৬টি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ২০০০ সাল নাগাদ এই প্রজনন হার 3.4-এ নেমে আসে। ২০১৯-২১ সালের মধ্যে জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা (NFHS-5) অনুযায়ী ভারতে ফার্টিলিটি রেট 2-এ নেমে এসেছে। অর্থাৎ, এখন ভারতীয় মহিলারা গড়ে ২টি সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। ২০৫০ সালের মধ্যে ফার্টিলিটি রেট 1.7-এ পৌঁছাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

একদিকে দেশে বেশি সন্তান নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হলেও বাস্তব এটাই যে, এখন অধিকাংশ নারীই কম সন্তান চান। এনএফএইচএস-৫ অনুসারে, বেশিরভাগ ভারতীয় মহিলা একটি মাত্র সন্তানই চান। বর্তমানে দেশে প্রজনন হার ২.০। এদিকে মহিলারা চান ১.৬।

সমীক্ষা অনুসারে, যাদের দু'টি সন্তান রয়েছে তাদের মধ্যে 86 শতাংশ পুরুষ ও মহিলা আর তৃতীয় সন্তান চান না। 

ভারতীয় সমাজে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বেশিরভাগ দম্পতিই কেবল একটি ছেলে চান। একটি ছেলের আকাঙ্ক্ষাই মহিলাদের আরও সন্তান নিতে বাধ্য করে। সমীক্ষা অনুযায়ী, ৩৫ শতাংশ নারী যাঁদের ছেলে নেই তাঁরা তৃতীয় সন্তান নিতে চান। মাত্র 9 শতাংশ মহিলা আছেন যাঁদের দুটি ছেলে রয়েছে এবং এখনও তাঁরা আরেকটি সন্তান চান।

তারপরও জনসংখ্যা বাড়ছে

সর্বশেষ আদমশুমারি ২০১১ সালে হয়েছিল। তখন ভারতের জনসংখ্যা ছিল ১২১ কোটিরও বেশি। ২০০১ সালের তুলনায় ২০১১ সালে ভারতের জনসংখ্যা ১৭.৭% বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল ১০২ কোটি।

যদিও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কয়েক দশক ধরে কমছে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে জনসংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। বর্তমানে ভারতের আনুমানিক জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি। যদি ২০১১ সালের সঙ্গে তুলনা করা হয়, তাহলে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ শতাংশ বেড়েছে।

Read more!
Advertisement
Advertisement