
ভারত সফলভাবে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম কে-৪ সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইল (SLBM)-এর পরীক্ষা চালিয়েছে। প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রটি স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণে বঙ্গোপসাগরে বিশাখাপত্তনম উপকূলের কাছে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন আইএনএস আরিঘাট থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় বলে সূত্রের খবর।
যদিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে এই পরীক্ষার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি, তবে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সূত্র ইন্ডিয়া টুডে টিভিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত বছর আইএনএস আরিঘাট থেকে প্রথমবার কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর এটি ছিল দ্বিতীয় সফল পরীক্ষা। এর ফলে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি সম্পূর্ণ অপারেশনাল প্রস্তুতির আরও এক ধাপ কাছে পৌঁছাল বলে মনে করা হচ্ছে।
ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO)-এর তৈরি কে-৪ একটি কঠিন জ্বালানি নির্ভর ক্ষেপণাস্ত্র, যা বিশেষভাবে ভারতের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনগুলিকে সজ্জিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের ‘সেকেন্ড স্ট্রাইক ক্যাপাবিলিটি’ বা দ্বিতীয়-আক্রমণ সক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করে।
২০২৪ সালের আগস্টে ভারতীয় নৌবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত আইএনএস আরিঘাট ভারতের সর্বাধুনিক পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন। প্রায় ৬,০০০ টন ওজনের এই সাবমেরিন ৩,৫০০ কিলোমিটার পাল্লার কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম, যা দেশের কৌশলগত প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও মজবুত করেছে।
এর আগে, ২০১৬ সালে কমিশন করা ভারতের প্রথম পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত ৭৫০ কিলোমিটার পাল্লার কে-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত ছিল। উল্লেখযোগ্য যে, কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রাথমিক পরীক্ষাগুলি সাবমার্সিবল পন্টুন থেকে করা হয়েছিল। কিন্তু সরাসরি আইএনএস আরিঘাট থেকে উৎক্ষেপণ এই ব্যবস্থার কার্যকরী মোতায়েনের পথে একটি বড় অগ্রগতি বলে ধরা হচ্ছে।
বিশ্ব প্রেক্ষাপটে, আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিন ইতিমধ্যেই ৫,০০০ কিলোমিটারের বেশি পাল্লার সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইল মোতায়েন করেছে। সেই তুলনায় ভারতের কে-৪ কর্মসূচিকে আন্তর্জাতিক কৌশলগত সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবেই দেখছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।