ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির মধ্যে বড় বার্তা দিল ভারতের বায়ুসেনা। তারা জানাল, অপারেশন সিঁদুর এখনও চলছে। রবিবার এক্স হল্যান্ডে পোস্ট করে একথা জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। তারা ভুয়ো খবর প্রচার না করার কথাও জানিয়েছে। এক্স হ্যান্ডেলে আইএএফ বলেছে, 'ভারতের বিমান বাহিনী (IAF) অপারেশন সিঁদুরে তার অর্পিত দায়িত্বগুলি সফলভাবে নির্ভুলতা এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করেছে। জাতীয় উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে সুচিন্তিত এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে অপারেশন পরিচালনা করা হয়েছে। যেহেতু অপারেশন এখনও চলছে, তাই যথাসময়ে একটি বিস্তারিত ব্রিফিং করা হবে। IAF সকলকে জল্পনা এবং যাচাই না করা তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।'
শনিবার বিকেলে ট্রাম্প আচমকা ঘোষণায় ঘোষণা করেন যে তাঁর প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পর ভারত ও পাকিস্তান পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে, যার ফলে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে চার দিনের উত্তেজনার অবসান ঘটেছে। ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই, ভারত জানিয়েছে যে পাকিস্তানের ডিজিএমও বিকেল ৩:৩০ মিনিটে ভারতের ডিজিএমও-কে ফোন করেছিলেন। দুজনের কথার পরেই বিকেল ৫টা থেকে সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ। তবে, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই সংঘর্ষবিরতি স্থায়ী হয়েছিল। শনিবার সন্ধেতেই আন্তর্জাতিক সীমান্তের আখনুর, রাজৌরি এবং আরএস পুরা সেক্টরে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু হয়। একাধিক ড্রোন দেখা যায় ভারতের আকাশে। বাহিনী এই অঞ্চলে চারটি ড্রোন ধ্বংস করে।
ভারতের আক্রমণে নূর খান বিমানঘাঁটি ধ্বংসের পর পাকিস্তান ভীষণ ভীত হয়ে পড়ে। পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল এবং ভারতের মিসাইল ঠেকাতে মারাত্মকভাবে ব্যর্থ হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল ভারত আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের সমস্ত সামরিক ঘাঁটি এবং অস্ত্রের গুদাম ধ্বংস করে দেবে। ইতিমধ্যেই, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেন এবং তার পরে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
জেডি ভান্স ফোনে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কী বলেছিলেন?
আমেরিকান কর্তাদের বরাত দিয়ে CNN এই তথ্য প্রকাশ করেছে। সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুসারে, আমেরিকা কিছু গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিল যা খুবই বিপজ্জনক ছিল। এই তথ্য এতটাই সংবেদনশীল ছিল যে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল ও যুদ্ধবিরতির জন্য ভারতের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছিল। যদিও তারা মাত্র একদিন আগেই বলেছিল যে এই ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। সিএনএন-র প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি আশঙ্কা করেছিল যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, যা সম্ভাব্যভাবে পরমাণু যুদ্ধের দিকে পরিচালিত করতে পারে। গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ার পর, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টেলিফোন করেন এবং সেই গোয়েন্দা তথ্য দেওয়ার পর, পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির সমাধান খুঁজে বের করার প্রস্তাব দেন। তার টেলিফোন কলের উদ্দেশ্য ছিল ভারতকে সরাসরি যুদ্ধ এড়াতে পরামর্শ দেওয়া। সিএনএন মার্কিন কর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে 'গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর, জেডি ভান্স প্রথমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার সঙ্গে তথ্য ভাগ করে নেন এবং তারপরে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টেলিফোন করেন।' এই সময় জেডি ভান্স প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বলেন যে 'আমেরিকার অনুমান, যদি আরও দুই দিন এই সংঘাত চলতে থাকে, তাহলে এই যুদ্ধ নাটকীয় পরিণতিতে পৌঁছাতে পারে।' তবে, মার্কিন কর্তারা বলেননি যে 'সেই গোয়েন্দা তথ্য কী ছিল এবং যুদ্ধের এত নাটকীয় পরিণতির দিকে যাওয়ার পেছনে এর অর্থ কী ছিল?'