জলপাইগুড়ির মাটিতে ত্রিশক্তি কর্পসের সামরিক মহড়ায় গর্জে উঠল টি-৯০ ট্যাঙ্কের কামান। চারদিক কেঁপে উঠল গমগমে আওয়াজে। একের পর এক ট্যাঙ্ক সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে গিয়ে লক্ষ্যভেদ করল নিখুঁতভাবে। দেশের সীমান্তরক্ষায় প্রস্তুতির বার্তা স্পষ্ট করে দিল এই মহড়া।
কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মহড়া
সেনাবাহিনীর এই মহড়া বিশেষভাবে পরিচালিত হয়েছে উত্তরবঙ্গের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল চিকেন নেক অর্থাৎ শিলিগুড়ি করিডোর এলাকায়। এটি ভারতের অন্যতম সংবেদনশীল করিডোর, মূল ভূখণ্ডের সংযোগ রক্ষা করে। শত্রুপক্ষ যদি কোনোভাবে এই অংশ দখল করতে পারে, তবে উত্তর-পূর্ব ভারতকে বাকি দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া সম্ভব। তাই ভারতীয় সেনাবাহিনী এই অঞ্চলকে রক্ষায় সর্বদা তৎপর। এবার সেই লক্ষ্যে ত্রিশক্তি কর্পসের অধীনে মাসব্যাপী সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হলো।
টি-৯০ ট্যাঙ্কের শক্তি ও কার্যক্ষমতা
ভারতের অন্যতম আধুনিক যুদ্ধযান টি-৯০ ট্যাঙ্ক এই মহড়ার অন্যতম আকর্ষণ ছিল। উন্নত প্রযুক্তির কারণে এটি রাতের অন্ধকারেও সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যভেদ করতে পারে। এতে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সেন্সর, যা প্রতিকূল আবহাওয়াতেও কাজ করতে সক্ষম। দ্রুতগতিতে স্থান পরিবর্তনের ক্ষমতা এবং সঠিক নিশানায় আঘাত হানার দক্ষতা একে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে।
সেনাবাহিনীর বার্তা: সর্বদা প্রস্তুত ভারত
এই মহড়ায় শুধু ট্যাঙ্ক নয়, অত্যাধুনিক ড্রোন এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামও ব্যবহার করা হয়েছে। এক সেনা কর্তা জানান, এই মহড়া অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল এবং এতে সৈন্যদের দক্ষতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, “এই অনুশীলন আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করেছে। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য— দেশের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যাওয়া এবং আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।”
শত্রুদের জন্য কঠোর বার্তা
জলপাইগুড়ির এই সামরিক মহড়া ভারতীয় সেনার যুদ্ধ-প্রস্তুতির এক শক্তিশালী নিদর্শন। সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে, যাতে চিন, পাকিস্তান বা অন্য কোনো শত্রুপক্ষ আক্রমণের পরিকল্পনা করার আগেই সতর্ক হয়ে যায়। ভারত যে সামরিক শক্তিতে প্রতিনিয়ত আরও উন্নত হচ্ছে, এই মহড়া তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
সংবাদদাতা- রাজেন প্রধান