মাথায় ঝুলছে ৪৮ ঘণ্টার ডেডলাইন। তার মধ্যে ভারত থেকে পাকিস্তানে ফিরতে হবে সে দেশের নাগরিকদের। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জেরে ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তে বহু পাকিস্তানিই ঘরে ফিরতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। এত অল্প সময়ে কীভাবে পাকিস্তান ফিরবেন, এই চিন্তায় ঘুম উড়েছে অনেকের। পাকিস্তানে বিয়ে হয়েছে ভারতীয় এক মহিলার। হামলার পরবর্তী পদক্ষেপে বাপের বাড়ি ছেড়ে তড়িঘড়ি শ্বশুরবাড়ি যেতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে তাঁকে।
শুধু ওই মহিলাই নন, এমন অনেকেই ভারতে নিজেদের পরিজনদের ছেড়ে বাধ্য হয়ে পাকিস্তান ফিরে যাচ্ছেন। এক মহিলার কথায়, '৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। কীভাবে সম্ভব এটা? আটারি যোধপুর থেকে ৯০০ কিমি দূরে। আমরা বাস পাচ্ছি না। টিকিটের জন্য আমার স্বামী ১ লক্ষ টাকা খরচ করেছে।' তাঁর সংযোজন, 'আমার ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে। কিন্তু আমি হাফ-পাকিস্তানি। হামলার জন্য খারাপ লাগছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের দোষ কোথায়? আমার কাছে, ভারত-পাকিস্তান, দুই দেশই গুরুত্বপূর্ণ। যারা দোষী, তাদের ভগবান শাস্তি দেবে।'
আরও অনেক মহিলাই আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে জড়ো হয়েছেন। কয়েক দশক ধরে তাঁদের অনেকেই পাকিস্তানে থাকেন। তবে জন্মভূমি ভারতের সঙ্গে সেই আত্মিক সম্পর্ক তাঁরা বজায় রেখেছেন।
বোনকে ছাড়তে আটারি সীমান্তে গিয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর কথায়, 'ওর ৪০ দিনের ভিসা ছিল। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এখনই ফিরে যেতে হচ্ছে। ওকে ফেরানোর জন্য গাড়ি ভাড়া করতে হয়েছে, যার জন্য অনেকটা খরচ হয়েছে।'
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে অন্যতম দর্শনীয় স্থান পহেলগাঁওয়ের বৈসরণে পর্যটকদের উপর এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩ জন বাঙালি পর্যটক। জখম হয়েছেন আরও অনেকে। পুলওয়ামার হামলার পর ভূস্বর্গে এত বড় মাপের জঙ্গি হামলা হল। পর্যটকে ঠাসা কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কড়া বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলেছেন, 'ভারত অবশ্যই প্রত্যেক সন্ত্রাসবাদীকে খুঁজে বার করবে। তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেবে। শাস্তি দেওয়া হবে তাদের মদতদাতাদেরও।' মোদী এ-ও বলেছেন, 'যে সব জঙ্গি এই হামলা ঘটিয়েছে এবং যারা এই হামলার ষড়যন্ত্র করেছে, তারা এমন শাস্তি পাবে, যা কল্পনাতীত।' পাক নাগরিকদের দেওয়া সমস্ত ভিসা বৃহস্পতিবার বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে পাকিস্তানিদের ভারত থেকে ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।