
গুজরাত অপরাধ দমন শাখার হাতে ধৃত ৩ ISIS জঙ্গির মধ্যে একজন পেশায় ডাক্তার। জানা গিয়েছে, তিনি রাইসিন বিষ তৈরি করছিল। এটি একটি উচ্চমাত্রার টক্সিক কেমিক্যাল। যা মূলত ক্যাস্টর ওয়েল বীজ থেকে তৈরি হয়। এমনই বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসে ধৃত ওই ডাক্তারকে জেরার পর। শুধু তাই নয়, এই বিষ বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল তার। আর সেই মর্মে দেশের ২-৩ শহরের লোকাল মার্কেটও সার্ভে করেছিল সে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ডাক্তার তথা ISIS জঙ্গি দিল্লির আজাদপুর মান্ডি, আমেদাবাদের নরোদা ফলের বাজার এবং লখনউতে RSS অফিস রেইকি করেছিল। গত ৬ মাস ধরে ৩ স্থানে ঘুরছিল সে। মূলত ভিড় এই এলাকাগুলিকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল বিষ প্রয়োগের জন্য, অনুমান এমনটাই।
গুজরাতের অপরাধ দমন শাখা জানাচ্ছে, এই ISIS জঙ্গি ডাক্তারের নাম আহমেদ মইনুদ্দিন। বয়স ৩৫। হায়দরাবাদের বাসিন্দা সে। কাস্টর ওয়েলের বীজ থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন দিয়ে রাইসিন বিষ তৈরি করে সেটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ছক কষছিল এই জঙ্গি ডাক্তার। গত ৭ নভেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কী এই রাইসিন বিষ?
রাইসিনের বিষক্রিয়া বিরল। সাধারণত বিষক্রিয়া তখনই ঘটে যখন বীজগুলি খাওয়া হয়। যদিও এই বিষ বড় মাত্রায় প্রাণঘাতী হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে অপরাধের পরিকল্পনা করে এই বিষ ব্যবহারের ঘটনা অত্যন্ত অস্বাভাবিক। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে মৃত্যু হতে পারে।
গুজরাত অপরাধ দমন শাখা একটি অফিসিয়াল বিবৃতি দিয়ে জানাচ্ছে, একটি বড় সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানোর জন্য আহমেদ মইনুদ্দিন সইয়দ রাইসিন নামে একটি অত্যন্ত প্রাণঘাতী বিষ প্রস্তুত করছিলেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় গবেষণা শুরু করেছেন। সরঞ্জাম ও কাঁচামাল সংগ্রহ করেছেন এবং এর প্রস্তুতির জন্য প্রাথমিক রাসায়নিক প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন।
গুজরাতের অপরাধ দমন শাখা এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি এখন বাজেয়াপ্ত করা সামগ্রী ও ইলেকট্রনিকের মাধ্যমে প্রমাণ বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছেন। যাতে রাসায়নিকগুলি শনাক্ত করা যায় এবং বোঝা যায় রাইসিনের কোনও পরীক্ষামূলক প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছিল কি না।
এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের ২ জন এবং হায়দ্রাবাদ থেকে ১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই জানা গিয়েছে তারা ISIS-এর সদস্য। এরা স্লিপার সেল হিসেবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সক্রিয় ছিল।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, এই জঙ্গি জাকর্তার চিন থেকে MBBS-এর সমগোত্রীয় ডিগ্রি অর্জন করেছে। সেখানে ISIS-এর সদস্য আবু খাদিমের সঙ্গে যোগাযোগে ছিল, যে ISIS-এর আঞ্চলিক শাখার প্রধান।
গুজরাত অপরাধ দমন শাখার DIG সুনীল জোশি সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে জানায়, ডা: আহমেদ মইনুদ্দিন সইয়দ উচ্চশিক্ষিত এবং চরমপন্থী। সে একটি বড় সন্ত্রাসবাদী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তহবিল সংগ্রহ এবং নতুন সদস্য নিয়োগের কাজ চালাচ্ছিল।