শনিবার সূর্যকে কেন্দ্র করে হ্যালো কক্ষপথে প্রবেশ করবে আদিত্য-L1। এদিন অন্তিমবারের মতো ম্যানুভার করবে ISRO-র এই 'সৌরযান'। এই প্রথম সূর্যের এতটা কাছে পৌঁছাতে পারল ভারত। দেশের মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় সাফল্য। শনিবার সূর্য-পৃথিবী ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট 1 (L1)-এর চারপাশে অবস্থান করবে আদিত্য-L1।
পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে এই কক্ষপথ। গবেষকরা বলছেন, এই অবস্থান থেকে সবচেয়ে ভালভাবে সূর্যের বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ, নিরীক্ষণ করা যাবে।
গত বছর ২ সেপ্টেম্বর PSLV-C57-এর মাধ্যমে আদিত্য L1-এর লঞ্চ করা হয়। প্রায় ১১০ দিনের ট্রানজিটের পর অবশেষে হ্যালো কক্ষপথে শেষবারের মতো অবস্থান বদল করতে চলেছে আদিত্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এদিনের কক্ষপথ পরিবর্তনের প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অবস্থানে পৌঁছে গেলেই পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের বাইরে চলে যাবে আদিত্য এল ওয়ান। এই অবস্থান থেকে সূর্যকে নির্বিঘ্নে পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
এই মিশনের উদ্দেশ্য
আদিত্য এল ওয়ান মিশনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল সৌর বায়ুমণ্ডল, বিশেষত ক্রোমোস্ফিয়ার এবং করোনা পর্যবেক্ষণ করা। করোনাল মাস ইজেকশন (CMEs), সৌর শিখা এবং সৌর করোনার মতো ঘটনা সম্পর্কেও জানা যাবে।
এই গবেষণার মাধ্যমে মহাকাশ আবহাওয়ার উপর সূর্যের প্রভাব জানা যাবে। সহজ ভাষায় বললে, সৌর ঝড়ের সময়ে স্যাটেলাইট অপারেশন, টেলিযোগাযোগ এবং পৃথিবীতে পাওয়ার গ্রিডগুলি প্রভাবিত হয়। সেটা কেন হয়, ঠিক কতটা প্রভাব পড়ে তার একটি বিস্তৃত ধারণা মিলবে।
আদিত্য-L1-এ সাতটি অত্যাধুনিক পেলোড রয়েছে। আদিত্য-এল 1 ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এবং পার্টিকেল ডিটেক্টরের মাধ্যমে সূর্যের বাইরের স্তরগুলির পর্যবেক্ষণ করবে। রয়েছে ভিজিবল এমিশন লাইন করোনাগ্রাফ (VELC), সোলার লো এনার্জি এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার (SoLEXS), আদিত্যের প্লাজমা অ্যানালাইসিস প্যাকেজ (PAPA), হাই এনার্জি L1 অরবিটিং এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার (HEL1OS), সোলার আল্ট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোপ (SUIT), আদিত্য সোলার উইন্ড পার্টিকেল এক্সপেরিমেন্ট (ASPEX), এবং অনবোর্ড ম্যাগনেটোমিটার (MAG)।
একবার হ্যালো কক্ষপথে পৌঁছে গেলে তারপর আদিত্য-এল 1 পাঁচ বছরের জন্য কাজ শুরু করবে। করোনাল হিটিং, সৌর অগ্ন্যুৎপাত এবং তাদের প্রভাব সম্পর্কে জানা যাবে এই অভিযানের মাধ্যমে।
মহাকাশ পরিবেশে সূর্যের প্রভাব সম্পর্কে এটিই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বিস্তৃত জ্ঞান প্রদান করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ISRO চেয়ারম্যান এস সোমানাথ জানিয়েছেন, এর ফলে যে শুধুমাত্র ভারত উপকৃত হবে, তাই নয়। বরং বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের সৌর গতিবিদ্যা বুঝতেও সাহায্য করবে।