পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের নাম ‘জগন্নাথ ধাম’ রাখাকে কেন্দ্র করে প্রবল আপত্তি তুলেছেন পুরীর শ্রীজগন্নাথ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেব। তাঁর বক্তব্য, “জগন্নাথ ধাম একটাই—সেটা শুধুমাত্র পুরীতেই।”
সোমবার এক বিবৃতিতে গজপতি মহারাজ জানান, দিঘার মন্দিরকে ‘জগন্নাথ ধাম’ বা ‘জগন্নাথ ধাম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ নামে অভিহিত করায় তিনি অবাক এবং উদ্বিগ্ন। এই প্রসঙ্গে তিনি পুরাতন ধর্মগ্রন্থ, পুরাণ এবং বৈদিক গ্রন্থগুলির উল্লেখ করে বলেন, জগন্নাথধাম, পুরুষোত্তমক্ষেত্র, নীলাচলধাম বা শ্রীক্ষেত্র—এই নামগুলি শুধুমাত্র পুরীর মন্দিরের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
তিনি জানান, এই বিষয়ে ‘মুক্তিমুণ্ডপ পণ্ডিত সভা’-র মতামত চাওয়া হয়েছিল এবং তাঁরাও এই নাম ব্যবহার নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। পণ্ডিতদের মত অনুযায়ী, শুধুমাত্র পুরীর মন্দিরেই চতুর্ভুজ কাঠের মূর্তি সহ জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার আদি উপস্থিতি রয়েছে, যা অন্য কোথাও নেই। তাই অন্য কোনও জায়গাকে ‘ধাম’ বলা উচিত নয়।
গজপতি মহারাজের আরও বক্তব্য, ধর্মগ্রন্থে যেমন স্কন্দ পুরাণ, ব্রহ্ম পুরাণ, পদ্মপুরাণে বারবার বলা হয়েছে, কেবলমাত্র ভগবানের চিরস্থায়ী এবং পবিত্র আবাসস্থলকেই ‘ধাম’ বলা যায়। শ্রী চৈতন্য, মাধবাচার্য থেকে বল্লভাচার্যের মতো আচার্যগণও শুধুমাত্র পুরীকেই ‘শ্রী জগন্নাথ ধাম’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
দিঘা মন্দির কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে গজপতি মহারাজ বলেন, তাঁরা যেন ধর্মীয় ভাবাবেগের মর্যাদা দেন এবং ‘ধাম’ শব্দটি নাম থেকে বাদ দেন। তাঁর মতে, ভগবান জগন্নাথের ঐতিহাসিক গৌরব ও ঐতিহ্যকে সম্মান করা সারা বিশ্বের ভক্তদের প্রতি দায়িত্ব। নামকরণে এই ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি করা উচিত নয়।