খবর কোন সূত্র মারফত পাচ্ছেন, তা গোপন রাখার অধিকার রয়েছে সাংবাদিকের। কিন্তু বিষয়টিতে নজিরবিহীন নির্দেশ দিল দিল্লির একটি বিশেষ আদালত। নির্দেশে বলা হয়েছে, সাংবাদিকরা কোন সূত্র থেকে খবর পাচ্ছেন, তা তদন্তকারী সংস্থার কাছে আর গোপন রাখা যাবে না। বুধবার নয়াদিল্লিতে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের তরফে একটি ‘ক্লোজ়ার রিপোর্ট’ বাতিল করে দেওয়ার পর এমনটাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুলায়ম সিংহ যাদব এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে হওয়ার কথা ছিল ২০০৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। ঠিক তার আগের দিন একটি সংবাদপত্রে তাঁকে নিয়ে একটি খবর ছাপা হয়। কিন্তু পরে জানা যায় যে, সাংবাদিকটি ভুয়ো নথিপত্রের ভিত্তিতে খবরটি প্রকাশ করেছিলেন। এই বিষয়ে তদন্ত শুরু হলে ওই সাংবাদিক জানান, তিনি কোন সূত্রে খবরটি পেয়েছেন, তা প্রকাশ্যে বলতে পারবেন না। ফলে, তদন্ত সেখানেই থেমে যায়।
এদিন রাউস অ্যাভিনিউ জেলা আদালতের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জলি মহাজন এই মামলা সংক্রান্ত ক্লোজ়ার রিপোর্টটি বাতিল করে দেন। তাঁর বক্তব্য, তদন্ত চলাকালীন এক জন সাংবাদিক কোন সূত্রে খবর পেয়েছেন তা তদন্তকারী সংস্থার কাছে গোপন রাখতে পারেন না। তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁকে সব কিছু প্রকাশ করতে হবে।
২০০৫ সালে আইনজীবী বিশ্বনাথ চতুর্বেদীর দায়ের করা একটি রিট পিটিশনের পর সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে মুলায়ম এবং তার পরিবারের সদস্যদের অর্জিত সম্পদের প্রাথমিক তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল। সংগৃহীত প্রমাণের উপর ভিত্তি করে একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল এবং সুপ্রিম কোর্টের সামনে দুটি সিল করা খামে রাখা হয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টের সামনে চূড়ান্ত রায়ের জন্য বিচার মুলতুবি থাকা অবস্থায়, নির্ধারিত শুনানির এক দিন আগে, একটি সংবাদমাধ্যম খবর করেছিল,যার শিরোনাম ছিল, 'সিবিআই স্বীকার করতে পারে মুলায়মকে ফাঁসানো হয়েছে'। সিবিআই দাবি করেছিল যে, নিউজ চ্যানেলের দ্বারা ব্যবহৃত নথিগুলি জাল। কিন্তু তা প্রমাণ করা যায়নি। কারণ সাংবাদিক সূত্র গোপন করেছিল।
আদালত বলেছে যে তদন্তকারী সংস্থা সর্বদা সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের নজরে আনতে পারে যে উৎস প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা তদন্তের প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য এবং গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তে সাহায্য করার জন্য সাংবাদিককে সূত্র প্রকাশ করতে হবে।