পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর একটি বড় গুপ্তচরচক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে। ভ্রমণবিষয়ক ভিডিও এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও, তদন্তে উঠে এসেছে এক ভয়াবহ তথ্য—সে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত যোগাযোগ করেছিল, যা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য প্রতিষ্ঠিত এলাকা হিসেবে পরিচিত।
পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভারতে এখনও পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম জ্যোতি মালহোত্রা। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কৌশলগতভাবে নিযুক্ত করেই কাজ চালাচ্ছিল আইএসআই। শুধু তথ্য সংগ্রহ নয়, অভিযুক্তদের পাকিস্তানের পক্ষে অনুকূল প্রচারের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল।
বর্তমানে মালহোত্রা পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তাঁকে জেরা করছে এনআইএ, আইবি ও হরিয়ানা পুলিশের যৌথ টিম। তদন্তকারীদের দাবি, সে জেরা এড়াতে বিভ্রান্তিকর উত্তর দিচ্ছে এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লুকানোর চেষ্টা করছে।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, প্রাথমিকভাবে সে পাকিস্তানি হাইকমিশনের কর্মকর্তা এহসান দার ওরফে দানিশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ অস্বীকার করে। উল্লেখ্য, পহেলগাম হামলার পর ১৩ মে ভারত থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল দানিশকে। কিন্তু তদন্তে উঠে আসে, দু’জনের মধ্যে বেশ কয়েকটি গোপন চ্যাট হয়েছিল যা পরে মুছে ফেলা হয়। মোবাইল ফোন ফরেন্সিক পরীক্ষায় তা ধরা পড়ে।
গোয়েন্দাদের সন্দেহ, এই বার্তালাপের মধ্যেই লুকিয়ে থাকতে পারে সেনা সংক্রান্ত গোপন তথ্য, বা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে নির্দেশাবলী। এই ঘটনার পর গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ভারতে সক্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবশালীদের আরও নিবিড়ভাবে নজরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হল, আধুনিক প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে কিভাবে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ভারতীয় মাটিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। তদন্ত এখনও চলছে।