
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লোকসভায় 'বন্দে মাতরম' বিতর্কের শুরুতে রচয়িতা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে 'দাদা' বলে সম্বোধন করছিলেন। তাঁকে শুধরে দেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তারপর প্রধানমন্ত্রী 'বাবু' বলে সম্বোধন করেন ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। আসরে নামে তৃণমূল। লোকসভার ভাষণে কার্যত ফুঁসে ওঠেন তৃণমূল সাংসদ কাকলী ঘোষদস্তিদার।
তিনি বলেন, 'ইতিমধ্যেই কয়েকশো টেলিফোন এবং মেসেজ পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে যে ভাবে ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে বঙ্কিমদা বললেন, মনে হল যেন চায়ের আড্ডায় বসে তিনি আলাপ আলোচনা করছেন। বাংলা এবং বাঙালি এটা ভাল ভাবে নিচ্ছে না। যেমন ভাবে মানুষ মেনে নেয়নি ঈশ্বরচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মূর্তি ভেঙে ফেলা। আমরা বিচা চাই বাংলার এই অপমানের। বংলা কিন্তু গর্জন করতে জানে। জয় হিন্দ স্লোগান কিন্তু বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজির কণ্ঠেই এসেছে। বাঙালির দেশাত্মবোধ সবার উপরে।'
কাকলী এদিন আরও বলেন, 'বন্দে মাতরম শুধ সঙ্গীত, কাব্য বা স্লোগান নয়, এটা প্রত্যেক ভারতবাসীর হৃদয়ের গভীরে এক সংকল্প ও চেতনাবোধ সৃষ্টিকারী আবেগ। যা হাজার, হাজার কণ্ঠে ধ্বনিত হয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। অবশ্য এটা এখনকার শাসকরা বুঝবে না। কারণ মুছলেকা দিয়ে তাদের পূর্বসূরী সাভরকর নিজের মুক্তি নিশ্চিত করতে এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের তাঁবেদারিতে নিযুক্ত হয় তখন ৩৯৮ জন বাঙালি সেলুলার জেলে দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য লড়াই করছিলেন। ঋষি অরবিন্দ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ঋষি উপাধি দিয়েছিলেন। হয়তো ওঁদের এটা জানা নেই।'
কাকলীর আগে দমদমের তৃণমূল সাংসদ নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন করেন, 'আপনি বার বার বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে বঙ্কিমদা বলছেন কেন? অন্তত বাবু বলুন।' আপত্তি শুনে থমকে যান প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গেই ভুল সংশোধন করে তিনি বলেন, 'আচ্ছা, আপনার ভাবাবেগে আঘাত লাগার জন্য দুঃখিত। আমি বঙ্কিমবাবু বলছি।' এরপরে সৌগতকেই 'দাদা' বলে সম্বোধন করে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আপনাকে তো দাদা বলে সম্বোধন করতেই পারি।'