টাকে চুল গজানোর লোভে হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি হয় কানপুরের এক ইঞ্জিনিয়ারের। চিকিৎসকের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী তাঁর ডিগ্রি নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। যে ক্লিনিকে এই হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয় সেখানে বর্তমানে তালা ঝুলছে, পলাতক সেই চিকিৎসক অনুষ্কা তিওয়ারিও। ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফে তাঁকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর কোনও হদিশ মিলছে না। তার মাঝেই প্রকাশ্যে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, অনুষ্কা তিওয়ারি একজন ডেন্টিস্ট।
বর্তমানে কানপুরের যে ক্লিনিকে হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের বোর্ড লাগানো রয়েছে, সেখানে অতীতে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় ছিল।
মৃত ইঞ্জিনিয়ার বিনীত দুবের স্ত্রী জয়া দুবে ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, গত ১২ মার্চ গোরক্ষপুরে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ে স্বামী ডা. অনুষ্কা তিওয়ারির ক্লিনিকে হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাতে গিয়েছিলেন। টাকে চুল গজানোর এই প্রক্রিয়া চলাকালীন একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় বিনীতকে। তারপর থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। মুখ ফুলে যাওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে এবং শেষ পর্যন্ত ১৫ মার্চ তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকের গাফিলতিতেই স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জয়া দুবে। তাঁর উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনা চুল প্রতিস্থাপনের ঝুঁকি সম্পর্কে বড়সড় সতর্কবার্তা দিয়ে গেল। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও এটি সাধারণত নিরাপদ একটি পদ্ধতি, তবু এটি শুধু অভিজ্ঞ ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত সার্জনের তত্ত্বাবধানে স্বীকৃত হাসপাতালে করানো উচিত। চুল প্রতিস্থাপন হল একটি অস্ত্রোপচার যেখানে মাথার পিছনের দিক থেকে চুল তুলে টাক এলাকায় প্রতিস্থাপন করা হয়। মূলত এটি দুই ধরনের হয়ে থাকে — স্লিট গ্রাফ্ট (Slit Graft): প্রতিটি গ্রাফ্টে ৪ থেকে ১০টি চুল থাকে। মাইক্রোগ্রাফ্ট (Micrograft): এতে প্রতিটি গ্রাফ্টে ১ থেকে ২টি চুল থাকে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা, চুল প্রতিস্থাপনের সময় বা পরবর্তীতে কিছু সাধারণ সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন: রক্তপাত ও সংক্রমণ, মাথার ত্বকে প্রদাহ ও চুলকানি, চোখের চারপাশে ফোলা, মাথার ত্বকে স্ক্যাব বা অসাড়তা, লোমকূপে প্রদাহ ও অস্বাভাবিক চুলের বৃদ্ধি। চুল প্রতিস্থাপনের আগে প্রযুক্তি ও পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন, শুধুমাত্র অভিজ্ঞ ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত সার্জনের কাছেই করুন, ফলো-আপে অবহেলা করবেন না, কোনো অজানা বা কম-প্রসিদ্ধ ক্লিনিকে এই পদ্ধতি না করানোই ভালো।