বেসরকারি কোম্পানিতে স্থানীয় কন্নড়দের জন্য সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্য নেয় কর্নাটকের সিদ্দারামাইয়া সরকার।বিল অনুযায়ী কর্নাটকে বেসরকারি চাকরিতে ম্যানেজমেন্ট পদে অন্তত ৫০% কর্মীই কর্নাটকের বাসিন্দা হতে হবে। একইভাবে, বাদ বাকি পদে অন্তত ৭০% সংরক্ষণ রাখতে হবে সেই রাজ্যের মানুষের জন্য। তবে এই বিল এখনই পাশ হচ্ছে না। রাজ্য বিধানসভায় পেশ করার আগে সরকার তা পুনর্বিবেচনা করবে বলে জানা গেছে।
শিল্প, কারখানা এবং অন্যান্য সংস্থান বিল, ২০২৪-এ স্থানীয় প্রার্থীদের কর্নাটক রাজ্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিল নিয়ে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় আলোচনা হতে পারে।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এক্স-এ লেখেন, 'রাজ্যের সমস্ত বেসরকারি শিল্পে কম-গ্রেডের (গ্রুপ 'সি এবং ডি') পদের জন্য ১০০ শতাংশ কন্নড় নিয়োগ বাধ্যতামূলক করার জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভা সোমবার একটি বিলে অনুমোদন দিয়েছে।' তবে, তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী পোস্টটি ডিলিট করে দেন।
মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া তাঁর মন্ত্রীদের নেতৃত্বে বিলটিকে স্বাগত জানান এবং তাঁর সরকারকে "কন্নড়পন্থী" বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, "তাদের অগ্রাধিকার কন্নড়দের কল্যাণ দেখাশোনা করা।"
যদিও এই পদক্ষেপের কারণে আইটি শিল্পে তুমুল সমালোচনা হয়। যারা অভিযোগ করেছিল এই বিল বেঙ্গালুরুতে প্রযুক্তি শিল্পের বৃদ্ধিকে বাধা দেবে এবং চাকরিকে প্রভাবিত করবে।
একটি বিজ্ঞপিতে, সফ্টওয়্যার সংস্থা ন্যাসকম বলেছে, "ন্যাসকম সদস্যরা এই বিলের নিয়মগুলি নিয়ে গুরুতরভাবে উদ্বিগ্ন এবং রাজ্য সরকারকে বিলটি প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করছেন৷ বিলের বিধানগুলি এই অগ্রগতিকে বাধা দেবে, অনেক কোম্পানি চলে যেতে পারে এবং স্টার্টআপ আটকে যেতে পারে, বিশেষত যখন আরও বিশ্বব্যাপী সংস্থাগুলি (জিসিসি) রাজ্যে বিনিয়োগ করতে চাইছে।"
বিল সম্পর্কে উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার বলেছেন, "কন্নড়দের মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য কংগ্রেস কর্ণাটকে ক্ষমতায় এসেছিল - তা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড, কন্নড় পতাকা, কন্নড় ভাষা, সংস্কৃতি, নথি বা নথি কন্নড়দের জন্য চাকরিতে নির্দিষ্ট শতাংশ সংরক্ষণ।"
রাজ্যের আরেক মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খড়গে বলেছেন, "বিলটি শ্রম বিভাগ এনেছে। তারা এখনও শিল্প, শিল্পমন্ত্রী এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করেনি। আমি নিশ্চিত যে সামনে আসার আগে বিলের নিয়ম অনুযায়ী, তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণাকের সঙ্গে যথাযথ পরামর্শ করবে এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, শিল্পের সঙ্গে বৃহত্তর পরামর্শ করবে।"
কর্ণাটক ভারতের অন্যতম শিল্প-সমৃদ্ধ রাজ্য। ভারতের আইটি হাব বেঙ্গালুরুও সেখানে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের আইটি কর্মী তো বটেই, এছাড়াও বিভিন্ন স্কিল-ভিত্তিক কাজ, যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং, গবেষণা, উৎপাদন, ম্যানেজমেন্ট, হসপিটালিটি ইত্যাদি কাজের জন্য অন্য রাজ্যের বহু মানুষ কর্ণাটকে যান। বাঙালিদেরও একটি বড় অংশ কর্ণাটকে থাকেন। একইভাবে কর্ণাটকের এই বড় শিল্পগুলিতে গ্রুপ-সি, ডি পদে অনেক ছোট চাকরি থাকে। তাতেও বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ কাজ করেন। এই ধরনের সংরক্ষণ এলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বাংলা তথা ভিন রাজ্য থেকে আসা কর্মীরা। এই বিল নিয়ে চলছে তুমুল প্রতিবাদ।