
মুখ্যমন্ত্রী বদল নিয়ে কর্নাটকের ঘরোয়া বিবাদ এবার দিল্লির দরবারে। উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী পদে চেয়ে তাঁর অনুগামীরা এবার মল্লিকার্জুন খাড়গের দ্বারস্থ হলেন। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতেই দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন ১০ অনুগামী। শুক্রবার বৈঠক হতে পারে মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে।
ডিকে শিবকুমারের অনুগামীদের দাবি, কর্নাটকে নভেম্বর বিপ্লব শুরু হয়ে গিয়েছে। শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে না দেখা পর্যন্ত চূড়ান্ত বিজয় মিলবে না।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ‘নভেম্বর বিপ্লব’-কে ভুয়ো সংবাদ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, বিক্ষুব্ধদের যত বিপ্লব মিডিয়ায়। তিনি আবার নিজের অনুগামীদের পাল্টা আশ্বাস দিয়েছেন, পুরো ৫ বছরের জন্যই মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার খালি নেই বলে বিরোধী শিবিরের দাবি ফুৎকারে উড়িয়েছেন এই ওজনদার নেতা।
তবে এই প্রথম নয়, কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি নিয়ে কংগ্রেসের সিদ্দারামাইয়া বনাম শিবকুমারের লড়াই ২০২৩-এর মে মাসে দল ক্ষমতায় আসার সময় থেকেই চলছে। সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করার পর কর্নাটকের রাজনীতিতে কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, এই পদ দুই নেতার মধ্যে ‘সমান ভাগে ভাগ’ করে দিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। চুক্তি হয়েছে, পাঁচ বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বে প্রথম আড়াই বছর সিদ্দারামাইয়া কুর্সিতে থাকবেন। পরের আড়াই বছর পদ পাবেন শিবকুমার। দলের তরফে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছুই কখনও বলা হয়নি। শিবকুমারের দাবি, দলের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল আড়াই পর সিদ্দারামাইয়া তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি এগিয়ে দেবেন। কিন্তু সিদ্দারামাইয়া কথা রাখেননি।
দলে প্রভাবশালী ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন বিধায়ক রয়েছেন। কর্নাটকের রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে এই সম্প্রদায় যথেষ্ট প্রভাবশালী। অতীতে অনেক সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভাগ্য নির্ধারণ করেছে এই সম্প্রদায়ের নেতারা।
সিদ্দারামাইয়া দিল্লির কথায় চলার মানুষ নন। শিবকুমারকেও সম্পদ মনে করে কংগ্রেস। অতীতে একাধিক রাজ্যে দলের এই জাতীয় বিবাদে সঙ্কটমোচনের কাজ করেছেন খোদ শিবকুমার। এবার তাঁর নিজের লড়াই। সেক্ষেত্রে নিজের রাজ্যের এই সঙ্কট কংগ্রেস সভাপকি খাড়গে কীভাবে সামলান, সেটাই এখন দেখার।