মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ তামিলাগা ভেত্রি কাজাগাম (টিভিকে) আয়োজিত ভয়াবহ পদদলিত মৃত্যুর ঘটনায় দলের নেতা বিজয় এবং সংগঠনের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছে। আদালত মন্তব্য করেছে, 'অভিনেতা-রাজনীতিবিদদের এই মানসিকতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক,' এবং নির্দেশ দিয়েছে, ভারতীয় পুলিশ সার্ভিসের সিনিয়র অফিসার আসরা গর্গের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করা হোক।
ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আদালত বলেছে, 'এটি একটি মানবসৃষ্ট বিপর্যয়, যেখানে নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আদালত চোখ বুজে থাকতে পারে না বা নীরব দর্শক হতে পারে না।'
বিচারপতি সেন্থিলকুমার বলেন, বিজয় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান এবং দলটি অনুশোচনা প্রকাশ না করায় দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে। তিনি তিরস্কার করে প্রশ্ন তোলেন, 'একজন আয়োজক হিসেবে, আপনার কি কোনও দায়িত্ব নেই?' আদালত রাজ্যের 'বিজয়প্রীতি' নিয়েও কটাক্ষ করেছে।
আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানায়, ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একটি টিভিকে বাসের নিচে মোটরবাইক আটকে গিয়েছিল, তবুও চালক যান থামাননি। বিচারক মন্তব্য করেন, 'এটি স্পষ্ট হিট অ্যান্ড রান, কিন্তু পুলিশ কেন মামলা নথিভুক্ত করেনি?'
এছাড়া দলীয় নেতা আধব অর্জুনের বিতর্কিত পোস্টের প্রসঙ্গে আদালত প্রশ্ন তোলে, 'তিনি কি আইনের ঊর্ধ্বে?' এবং তাঁর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়।
একই সঙ্গে আদালত একটি জনস্বার্থ মামলা (PIL) শুনছে, যাতে দাবি করা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র সচিব ও রাজ্য পুলিশ প্রধান নতুন নির্দেশিকা বা SOP না হওয়া পর্যন্ত কোনও রোড শো বা বড় সমাবেশের অনুমতি না দেওয়া হোক।
টিভিকে নেতাদের আগাম জামিন আবেদনেও আদালত সংরক্ষিত রায় দিয়েছে। তাদের পক্ষে আইনজীবী ভি রাঘবচারী দাবি করেছেন, আবেদনকারীদের কোনও অপরাধমূলক উদ্দেশ্য ছিল না; বরং পুলিশের লাঠিচার্জ ও অব্যবস্থাপনাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল জে রবীন্দ্রন পাল্টা যুক্তিতে বলেন, টিভিকে নিজের টুইটে ভুল সময় ঘোষণা করে জনতাকে বিভ্রান্ত করেছিল, যা বিশৃঙ্খলা বাড়ায়। তিনি জানান, ঘটনাস্থলে ৫৫৯ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল, যা আগের রাজনৈতিক সভাগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।
আদালত সমগ্র ঘটনাকে একটি 'গভীর প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক দায় এড়ানোর নমুনা' বলে অভিহিত করেছে এবং SIT-কে দ্রুত তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।