
বিহার বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডির বড়সড় পরাজয়ের পর বিস্ফোরক সিদ্ধান্ত নিলেন লালু প্রসাদ যাদবের মেয়ে রোহিণী আচার্য। ভোটের ফল ঘোষণার মাত্র একদিন পরই তিনি ঘোষণা করলেন, তিনি রাজনীতি ছাড়ছেন এবং একইসঙ্গে নিজের পরিবার থেকেও নিজেকে বিচ্ছিন্ন করছেন। এই ঘোষণা তিনি এক্স-এ একটি আবেগঘন পোস্টের মাধ্যমে করেন।
রোহিণী আচার্য লিখেছেন, 'আমি রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছি এবং আমার পরিবারকেও অস্বীকার করছি। সঞ্জয় যাদব এবং রমিজ আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিলেন, আর আমি তার সমস্ত দায় নিজের ওপর নিচ্ছি।'
রোহিণী আচার্য পেশায় একজন চিকিৎসক। ২০২৪ সালে বিহারের সরণ লোকসভা আসনে আরজেডির টিকিটে লড়াই করেছিলেন। তবে তিনি বিজেপি প্রার্থী রাজীব প্রতাপ রুডির কাছে বড় ব্যবধানে হেরে যান। গত কয়েক মাস ধরে রোহিণীর সঙ্গে পরিবারের, বিশেষ করে ভাই তেজস্বী যাদবের সম্পর্কের অবনতি প্রকাশ্যে চলে আসে। তিনি লালু, তেজস্বী এবং দলের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেল আনফলো করেন। নিয়মিত ‘ক্রিপ্টিক’, আবেগঘন পোস্টে আরজেডি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে থাকেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই অস্থিরতার কেন্দ্রে ছিল ২০২২ সালে বাবাকে কিডনি দান করা নিয়ে ওঠা সন্দেহ ও গুজব। সমালোচকদের বিরুদ্ধে রোহিণী কঠোর অবস্থান নেন এবং চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন প্রমাণ দেখানোর। রোহিণীর পোস্টের ভাষ্যমতে, তার এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রভাব রেখেছেন আরজেডি বিদ্রোহী সঞ্জয় যাদব এবং রোহিণীর স্বামী রমিজ আলম।
লালুর পরিবারে বিতর্ক নতুন নয়। কয়েক মাস আগে বড় ছেলে তেজ প্রতাপ যাদবকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন লালু যাদব। তেজ প্রতাপ ফেসবুকে নিজস্ব প্রেমের সম্পর্ক প্রকাশ করেছিলেন। যাকে লালু বলেন 'পারিবারিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।' এই ঘটনার পরই পরিবারে ফাটল আরও স্পষ্ট হয়। তেজ প্রতাপ যদিও প্রকাশ্যে রোহিণীকে সমর্থন করেছিলেন। এবং একসময় তাঁর ‘বিরোধীদের বিরুদ্ধে সুদর্শন চক্র ব্যবহারের’ কথাও বলেন।
২০২২ সালে সিঙ্গাপুরে লালু প্রসাদ যাদবের কিডনি প্রতিস্থাপন হয়। কিডনি দেন রোহিণী আচার্য। সেই সময় তেজস্বী যাদব নিজ বোনকে “অতিমানব” বলে প্রশংসা করে বলেন।, “অটুট ভালোবাসা, ত্যাগ ও সাহসের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন রোহিণী।” কিন্তু পরিবারের এই তিক্ততা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা শেষ পর্যন্ত রোহিণীর ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।