চলতি বছর মহাকুম্ভে ৪০ কোটি ভক্ত সমাগম হওয়ার সম্ভবনা। মহাকুম্ভ থেকে ২ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে বলে আশা করছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। মহাকুম্ভ আয়োজনে সরকারি কোষাগার থেকে প্রচুর টাকা ব্যয় করা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সেই সব সমালোচকদের জবাব দিতেই মহাকুম্ভের অর্থনীতির কথা তুলে ধরেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
'ডিভাইন উত্তর প্রদেশ: দ্য মাস্ট ভিজিট সেক্রেড জার্নি' সম্মেলনে যোগী আদিত্যনাথ মহাকুম্ভের অর্থনৈতিক দিকটি তুলে ধরেন। তিনি বলেন,'২০১৯ সালে এই আয়োজন থেকে রাজ্যের কোষাগারে এসেছিল ১.২ লক্ষ কোটি টাকা। চলতি বছর ৪০ কোটি পুণ্যার্থী আসতে পারেন। ফলে মহাকুম্ভ থেকে ২ লক্ষ কোটি টাকা আয় হতে পারে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৬ কোটিরও বেশি পুণ্যার্থী কাশী বিশ্বনাথ দর্শন করেছেন বারাণসীতে। ১৩.৫৫ কোটিরও বেশি পুণ্যার্থী গিয়েছেন অযোধ্যায়'।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন,'১৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা এই মহাকুম্ভ মেলা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের প্রাচীন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে তুলে ধরবে। এর আধ্যাত্মিক ও সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম। মহাকুম্ভ কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয় বরং সামাজিক ও আধ্যাত্মিক ঐক্যের প্রতীক। মহাকুম্ভ হল বিশ্বের বৃহত্তম অস্থায়ী শহর। যে শহরে থাকবেন ৫০ লক্ষ পুণ্যার্থী। একসঙ্গে ১ কোটি পুণ্যার্থীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে'।
মহাকুম্ভকে প্রধান আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান হিসেবে বর্ণনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর মতে,'বিরাট, ঐশ্বরিক এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সমাবেশ কুম্ভ। বিশ্বাস এবং আধুনিকতার মিলন ঘটেছে। সাধু-সন্তদের সহযোগিতায় মহাকুম্ভের সাফল্য নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার'।
মহাকুম্ভের আগে পুরোদমে প্রস্তুতি
সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন,'মহাকুম্ভের আগে প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। সঙ্গমের ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে স্নানের ঘাট। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তাও জোরদার করেছে প্রশাসন। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রয়াগরাজ সফরের আগেই সমস্ত ঘাটে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খড়, পিতল এবং মাটি দিয়ে ভরা বস্তা দিয়ে সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে। সমস্ত ঘাটে মহিলাদের জন্য তৈরি হয়েছে পোশাক পরিবর্তনের আলাদা ঘর। প্রতিটি ঘাটে আলাদা প্রতীক (ডমরু, ত্রিশূল ইত্যাদি) স্থাপন করা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ দ্রুত চিনতে পারে। মহাকুম্ভে বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থীর সমাগমকে সামনে রেখে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সঙ্গম এলাকা পর্যবেক্ষণের জন্য ওয়াচ টাওয়ার তৈরি হয়েছে। সমস্ত ঘাটে রয়েছে জল ব্যারিকেডিংয়ের ব্যবস্থা।