
দিনের পর দিন ভুয়ো ময়নাতদন্ত রিপোর্ট লিখতে বাধ্য করা হত মহারাষ্ট্রের সাতারায় সরকারি হাসপাতালের আত্মঘাতী চিকিৎসককে। এমনটাই দাবি করেছেন মৃতার তুতো ভাই। একাধিকবার ধর্ষণে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পরও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পাত্তা দেয়নি।
এএনআই-কে আত্মঘাতী চিকিৎসকের তুতো ভাই বলেন, 'গত বছর অত্যধিক পুলিশ এবং রাজনৈতিক চাপ এসেছিল বোনের উপর। দিনের পর দিন ওকে চাপ দিয়ে ভুয়ো ময়নাতদন্ত রিপোর্ট লেখানো হত। DCP-র কাছে অভিযোগও দায়ের করেছিল। তবে কোনও পদক্ষেপ হয়নি। এমনও ঘটেছে, যে রোগী ওই হাসপাতালে ভর্তিও হয়নি, তার বিরুদ্ধে ভুয়ো ফিট সার্টিফিকেট তৈরি করতে হয়েছে ওকে।'
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি হোটেলের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার এক সরকারি হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসকের দেহ। তাঁর হাতের তালুতে সুইসাইডের কারণ উল্লেখ করা ছিল। লেখা ছিল এক পুলিশ অফিসারের নাম। যার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তোলেন তিনি। গত ৫ মাস ধরে ৪ বার তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে হাতের তালুতেই লিখে যান ওই মহিলা।
মহারাষ্ট্রের বিড় এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা চিকিৎসক দার্ঘদিন ধরেই সাতারার সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ইতিমধ্যেই দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তাঁর হাতের তালুতে দুই অফিসারের নাম পাওয়া যায়। সাব ইনস্পেক্টর গোপাল বাদানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল। এছাড়াও প্রশান্ত বাঙ্কারের নামে কয়েক মাস ধরে মানসিক নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করেছেন ওই তরুণী চিকিৎসক। দুই অফিসারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ভুয়ো মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরির অভিযোগ সত্যি কি না, সেটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। উচ্চপদস্থ এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, 'আমরা মামলা দায়ের করেছি। ময়নাতদন্ত হয়েছে। সুইসাইডের কারণ লেখা মহিলার হাতের তালু পরীক্ষা করা হয়েছে।'
এদিকে, মহারাষ্ট্রের মহিলা কমিশনের প্রধান রুপালি চাকনকর বলেন, 'সাতারা পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে অপরাধীকে।'
মহিলার আত্মীয়দের অভিযোগ, একাধিকবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেও কোনও লাভের লাভ হয়নি। সঠিক তদন্ত হবে, এমনটাই আশা করছেন তারা।