শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির হলফনামা নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। শিল্পপতি হিরানন্দানির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মহুয়ার দাবি, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে চাপ দিয়ে ওই শিল্পপতিকে সাদা কাগজে সই করানো হয়েছে। যা ফাঁস হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। অফিসিয়াল লেটার হেডে কোনও অভিযোগ করা হয়নি।
মহুয়া জানিয়েছেন,তাঁর মতো ধনী শিল্পপতির (হিরানন্দানি) সঙ্গে প্রধাননন্ত্রীর অফিস ও অন্য মন্ত্রীদের সরাসরি যোগ রয়েছে। কেন তিনি প্রথমবারের বিরোধী সাংসদকে উপহার দিলেন? কেনই বা সব দাবিদাওয়া মানতে যাবেন? এটা পুরোপুরি অযৌক্তিক। একটাই সত্যি, ওই চিঠিটা তৈরি হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে। এর সঙ্গে দর্শন যুক্ত নন।' তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, দর্শন ও তাঁর বাবার মাথায় কার্যত বন্দুক ঠেকিয়ে ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল সই করার জন্য। ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল তাঁদের।
মহুয়া যোগ করেন,'আদানিকাণ্ডে যে কোনওভাবেই হোক আমার মুখ বন্ধ করতে চাইছে বিজেপি সরকার।' দর্শনের স্বাক্ষরিত 'হলফনামা'কে তামাশা বলে মহুয়ার দাবি, এটি প্রধানমন্ত্রীর অফিসের কোনও মধ্য মেধার ব্যক্তি লিখেছেন। যিনি বিজেপি আইটি সেলেও কাজ করেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন,'দ্বাদশ অনুচ্ছেদে দর্শন লিখেছেন, তিনি ভয় পেয়ে আমার আবদার মেটাতেন। ভারতের অন্যতম বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান চালান দর্শন ও তাঁর বাবা। উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাতে তাঁর প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও দেশের প্রধানমন্ত্রী। সদ্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশে সফররত শিল্পপতিদের তালিকায় ছিলেন। এমন ধনী শিল্পপতি, যাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি যোগ রয়েছে তিনি প্রথমবারের বিরোধী সাংসদের আবদার মেটাতে বাধ্য হবেন? কেন উপহার দেবেন? এটা একেবারেই অযৌক্তিক।'
অর্থ ও উপহারের বিনিময়ে মহুয়া লোকসভায় প্রশ্ন করেছেন বলে অভিযোগ গত রবিবার অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। স্পিকার ওম বিড়লাকে পাঠানো চিঠিতে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও করেন। এরপর সংসদের এথিক্স কমিটিতে একটি 'হলফনামা' দেন শিল্পপতি হিরানন্দানি। স্বাক্ষরিত 'হলফনামা'য় তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি মোদী সরকার এবং আদানি গোষ্ঠীকে অস্বস্তিতে ফেলার মতো প্রশ্ন তোলার জন্য কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়াকে ব্যবহার করেছেন। ওই 'হলফনামা'র কথা জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। মহুয়া সংসদের লগ-ইন আইডি দিয়েছিলেন বলেও স্বীকার করে নিয়েছেন হিরানন্দানি। বিলাসবহুল উপহার, দিল্লির সরকারি বাসভবন সংস্কার করিয়ে দেওয়া, ছুটি কাটানো বা বেড়ানোর খরচ মহুয়াকে দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন।