সাতজন বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে গ্রেফতার করল হরিয়ানা পুলিশ। তাঁদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ থেকেই কর্মসূত্রে হরিয়ানা গিয়েছিলেন তাঁরা। বর্তমানে তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। অভিযোগ, সেখানে অত্যাচারেরও শিকার হচ্ছেন তাঁরা। ধৃতদের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ জোর করে আটকে রেখে দিচ্ছে শ্রমিকদের। দেওয়া হচ্ছে না খাবার, শুনছে না কোনও কথা। এমনকি বৈধ নথিপত্র দেখানোর পরও তাঁদের ছাড়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর রাঙ্গাইপুর ঠাকুরটোলা এলাকার বাসিন্দা আজমল হোসেন, লোকমান আলি, উসমান আলি, মানিরুল ইসলাম, সাদিকুল ইসলাম, পসেন দাস ও অভিজিৎ দাস দীর্ঘদিন ধরে হরিয়ানার গুরগাঁও এলাকায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড থাকলেও, শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য তাঁদের বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করে পুলিশ।
পরিবারের দাবি, এঁরা প্রত্যেকেই ভারতীয় নাগরিক। শুধু পেটের দায়ে ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের মুক্তির দাবিতে সরব হয়েছে গোটা গ্রাম।
ধৃতদের মধ্যে একজনের এক বৃদ্ধ মা সংবাদমাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, 'কাজ না করলে খাব কী? ছেলে কাজ করতে গিয়েছিল। আজ শুনছি বাংলাদেশি সন্দেহে ধরেছে। এমন অত্যাচার কেন?'
ঘটনার পর রাজনীতিও তুঙ্গে। তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
স্থানীয় বিধায়ক ও প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাস
এই ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। তিনি বলেন, 'যে সব রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার আছে, সেখানেই বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।' মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি বলেন, 'বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে অত্যাচার হচ্ছে। এই ঘটনার বিরুদ্ধে জেলায় প্রতিবাদ চলবে।'
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিজেপির দক্ষিণ মালদার সাংগঠনিক সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'পুলিশ কাউকে সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারে। যদি সঠিক কাগজপত্র থাকে, ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তৃণমূল এই নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক রাজনীতি করছে।'
সংবাদদাতা: মিল্টন পাল