বাংলার রাজনীতিতে তো বটেই, এমনকী জাতীয় রাজনীতিতেও অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর সেটা যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর হয়েছে তেমনটা নয়, রাজনৈতিক কেরিয়ারের প্রথম থেকেই নিজের একটা সতন্ত্র পরিচয় তৈরি করে ফেলেছিলেন তিনি। সংসদীয় রাজনীতিতে নিজস্ব একটা ঘরানা তৈরি করে ফেলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে যখন কেন্দ্রের মন্ত্রী ছিলেন সেই সময়ও একই রকমের দাপটের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন তিনি। নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একাধিকবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন মমতা। তারমধ্যে অন্যতম রেলমন্ত্রী। একাধিকবার রেলমন্ত্রক (Rail Ministry) সামলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর প্রত্যেকবারেই দেশবাসীকে দিয়েছেন নতুন নতুন চমক।
প্রথমবার রেলমন্ত্রী পদে...
২০০০ সালে প্রথম রেল বাজেট পেশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বজেটে পশ্চিমবঙ্গকে (West Bengal) দেওয়া অনেক প্রতিশ্রুতিই পূরণ করেছিলেন তিনি। দ্বি-সাপ্তাহিক নয়া দিল্লি-শিয়ালদা রাজধানী এক্সপ্রেসের পাশাপাশি আরও ৪টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন চালু করেন মমতা। সেগুলি হল হাওড়া-পুরুলিয়া এক্সপ্রেস, শিয়ালদা-নিউ জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেস, শালিমার-বাঁকুড়া এক্সপ্রেস এবং সাপ্তাহিক শিয়ালদা-অমৃতসর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। এছাড়া পুনে-হাওড়া আজাদহিন্দ এক্সপ্রেসের দিনসংখ্যাও বৃদ্ধি করেন তিনি। পাশাপাশি হাওড়া-দিঘা রেল প্রকল্পেরও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটে তাঁরই সময়ে। আর শুধু তাই নয়, পর্যটনের উন্নয়নের জন্য দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েতে দুটি নয়া ইঞ্জিন চালু করেন মমতা। এমনকী ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশান লিমিটেড (IRCTC) তৈরির প্রস্তাবও তাঁরই দেওয়া। সবমিলিয়ে ২০০০-০১ সালে নতুন মোট ১৯টি ট্রেন চালু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফের রেলমন্ত্রী মমতা
এরপর ২০০৯ সালে ফের রেলমন্ত্রী পদে আসীন হন মমতা। সেই বছর দেশের মোট ৫০টি স্টেশনকে আন্তর্জাতিক সুযোগসুবিধা সম্পন্ন বিশ্বমানের স্টেশনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাশাপাশি আরও ৩৭৫টি স্টেশনকে আদর্শ স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করেন। তাঁরই রেলমন্ত্রিত্বকালে যাত্রা শুরু হয় যুব এক্সপ্রেস ও দুরন্ত এক্সপ্রেসের। মহিলা যাত্রীদের কথা ভেবে মমতার অভিনব পদক্ষেপ লেডিস স্পেশাল। ২০০৯ সালের ১৯ জুলাই লেডিস স্পেশাল চালু হয় হাওড়া-ব্যান্ডেল শাখায়। পরে শিয়ালদা-কল্যাণী, পানভেল-মুম্বই সিএসটি সহ গোটা দেশের বিভিন্ন শাখায় মহিলা স্পেশাল ট্রেন চালু হয়। এমনকী কাশ্মীরের অনন্তনাগ-কাদিগন্দ রেলওয়েও চালু হয় তাঁরই উদ্যোগে। সবমিলিয়ে দেখতে গেলে দেশের রেলের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায় রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।