মণিপুরে ধিক্কারজনক ঘটনা। নগ্ন করে হাঁটানো হল মহিলাদের। ঘটনার ভিডিয়ো টুইটারে ভাইরাল হয়েছে। এরপরেই টনক নড়ে প্রশাসনের। মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতের নাম খুইরুম হেরাদাস। বৃহস্পতিবার সকালে থাউবাল জেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
খুইরুম হেরাদাসের বয়স ৩২ বছর। ভাইরাল ভিডিও থেকে পুলিশ তাকে শনাক্ত করেছে। ভিডিয়োতে তাকে সবুজ টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা গিয়েছে। মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার মূলে রয়েছে খুইরম হেরাদাস। ভাইরাল ভিডিওর অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের ১২টি দল গঠন করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়েছে।
গত ৪ মে মণিপুরে মহিলাদের সঙ্গে এই বর্বর আচরণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের দুই মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় বের করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার মণিপুরের আদিবাসী উপজাতীয় নেতাদের ফোরাম (ITLF) তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরতে ঘোষিত একটি পরিকল্পিত প্রতিবাদ মিছিল বের করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু ওই প্রতিবাদ মিছিলের আগেই এই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ায় নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
আইটিএলএফ-এর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভিডিওটি ৪ মে-এর। কাংপোকপি জেলার। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একদল পুরুষ ক্রমাগত মহিলাদের শ্লীলতাহানি করছে। নির্যাতিত মহিলারা সাহায্যের জন্য কাতর আবেদন করছেন। তিনি জানান, অপরাধীরা ভিডিওটি বানিয়ে ভাইরালও করেছে। ফলে এই নিরপরাধ মহিলাদের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সংসদের বাদল অধিবেশনের সূচনায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমার হৃদয় ব্যাথিত। আমি ক্ষুব্ধ। মণিপুরের যে ঘটনা সামনে এসেছে, তা যে কোনও সভ্য সমাজের কাছে লজ্জার। অপরাধ করা, পাপ করা ব্যক্তিরা নিজের জায়গায় আছে। কিন্তু আমাদের মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। আমাদের মা-বোনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হোক। সেটা যে রাজ্য সরকারই হোক না কেন। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। মণিপুরের ঘটনায় কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দোষীদের কড়া শাস্তি দিতে হবে।'
গত দুই মাস ধরে জাতিগত হিংসার আগুনে পুড়ছে মণিপুর। এসবের মাঝে এই ভিডিও ভাইরাল হতেই এখানে উত্তেজনা আরও বেড়েছে৷ মণিপুরের জাতিগত হিংসায় সেখানকার মহিলাদের উপর হওয়া অকথ্য অত্যাচারের ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই উত্তর-পূর্বে আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে।