বৃন্দাবনের ঐতিহাসিক বাঁকেবিহারী মন্দিরে সম্প্রতি একটি ভাইরাল ভিডিও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, ভক্তরা মন্দিরের দেওয়ালের হাতির-মূর্তি সদৃশ পাইপ থেকে ঝরতে থাকা জলের ধারা চরণামৃত ভেবে পান করছেন। ধর্মবিশ্বাসে আস্থা রেখে তাঁরা এই জল ভক্তিভরে পান করছেন এবং পরিবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এই জল আসলে মন্দিরের এসির, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
মন্দির প্রাঙ্গণে শয়ে শয়ে ভক্ত এই জল সংগ্রহে ব্যস্ত থাকেন। কেউ কাগজের গ্লাসে এটি সংগ্রহ করছেন, আবার কেউ নিজের হাতে নিয়ে মুখে দিচ্ছেন। ভিডিওটি যিনি তুলেছেন, তাঁকে ভক্তদের সতর্ক করে বলতে শোনা গেছে, 'এটি এসির জল।' তবু ভক্তরা এই সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে নিজেদের বিশ্বাসে অটল থেকে ওই জল চরণামৃত ভেবে পান করেছেন। ইতিমধ্যেই ভিডিওটি প্রায় ৪০ লক্ষ ভিউ পেয়েছে এবং ব্যাপক চর্চার সৃষ্টি করেছে। যদিও ওই ভিডিওটির সত্যতা 'বাংলা ডট আজতক ডট ইন' যাচাই করে নি।
সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভিডিওটি নিয়ে আলোচনা চলছে। অনেকে বলেছেন, অন্ধবিশ্বাস মানুষকে কতটা বিপদে ফেলতে পারে এবং ধর্মান্ধ মানসিকতা সমাজে বিভাজন ও কুসংস্কারকে উৎসাহিত করে। লিভার বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসক এক্স-এ বলেছেন, 'কুলিং এবং এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম থেকে নির্গত জল বিষাক্ত হতে পারে, যা থেকে বিভিন্ন পেটের অসুখসহ প্রাণঘাতী রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।' অনেকে সামাজিকভাবে সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে লিখেছেন, অন্ধবিশ্বাসের জন্য এমন আচরণ গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালেও মুম্বইয়ের একটি গির্জায় এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল। তখন গির্জার যিশু খ্রিস্টের মূর্তির পায়ের নীচ থেকে জল পড়তে দেখে ভক্তরা আশীর্বাদস্বরূপ ভেবে পান করছিলেন। পরে তদন্তে দেখা যায়, সেটি আসলে নর্দমার জল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ধর্মীয় বিশ্বাস মানুষের কাছে মহত্ত্ব ও প্রেরণার উৎস হলেও, অন্ধবিশ্বাস থেকে সহজেই বিভ্রান্তি ও স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে। তাই এই ধরনের ঘটনাগুলির মাধ্যমে সমাজে স্বাস্থ্যবিধি ও বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তার গুরুত্ব বোঝা উচিত।