
হিন্দু সমাজের উদ্দেশে বিতর্কিত মন্তব্য করে নতুন করে শোরগোল ফেললেন বিজেপি নেত্রী নবনীত রানা। তাঁর দাবি, দেশের জনসংখ্যার ভারসাম্য বজায় রাখতে হিন্দু পরিবারগুলিকে কমপক্ষে তিন থেকে চারটি সন্তান নেওয়ার কথা ভাবা উচিত। না হলে ভবিষ্যতে ভারতের জনসংখ্যার গঠন পাকিস্তানের মতো হয়ে যেতে পারে, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নবনীত রানা বলেন, কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে একাধিক স্ত্রী ও বহু সন্তানের প্রবণতা রয়েছে, যার ফলে জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। তাঁর কথায়, 'ওরা প্রকাশ্যেই বলে, চার স্ত্রী, উনিশটি সন্তান। তাই আমি হিন্দুদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আপনারাও অন্তত তিন থেকে চারটি সন্তান নিন, যাতে দেশ ও সমাজের ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।'
তবে একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, জনসংখ্যা নিয়ে ভাবতে হলে তা ‘বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি’ থেকেই দেখা উচিত। কুসংস্কার বা অবৈজ্ঞানিক চিন্তাধারায় না গিয়ে, পরিকল্পিতভাবে জনসংখ্যা নীতির প্রয়োজন রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নবনীত রানা বলেন, 'ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটি গুরুতর বিষয়। যেসব রাজ্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, তারা নানা সমস্যায় ভুগছে।'
এই বক্তব্যের মধ্যেই তিনি আরএসএস ও বিজেপির কিছু ‘উগ্র বা উন্মাদ চিন্তাভাবনা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং এ ধরনের প্রবণতার অবসান হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন, যা রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
উল্লেখ্য, এই মন্তব্য নতুন নয়। এর আগেও আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত একাধিকবার ভারতীয় পরিবারগুলিকে অন্তত তিনটি সন্তান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর যুক্তি ছিল, জন্মহার কমে গেলে ভবিষ্যতে জনসংখ্যার স্থিতিশীলতা ও সামাজিক কাঠামো বিঘ্নিত হতে পারে।
নবনীত রানার সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। একদিকে সমর্থকদের একাংশ জনসংখ্যার ভারসাম্যের যুক্তি তুলে ধরছেন, অন্যদিকে বিরোধীরা একে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রচেষ্টা বলেই কটাক্ষ করছেন।