উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউতে এক বিবৃতিতে বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) প্রধান মায়াবতী বাংলাদেশে হিন্দু, বিশেষত দলিত ও দুর্বল শ্রেণির উপর চলা অত্যাচারের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, কংগ্রেস দল শুধুমাত্র মুসলিম ভোটব্যাংকের জন্য এই বিষয়ে নীরব।
মায়াবতীর বক্তব্য
মায়াবতী বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হওয়া অপরাধ এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। দলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের দুর্দশা বাড়ছে। অথচ কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি এই বিষয়ে কোনও কথা বলছে না। কারণ তারা মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখার কৌশল নিয়ে ব্যস্ত।”
তিনি আরও বলেন, “সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস এক মুদ্রার দুই পিঠ। এরা দেশের সামাজিক কাঠামো নষ্ট করেছে। বাংলাদেশি হিন্দুদের স্বার্থে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
বাংলাদেশি হিন্দুদের ভারত ফেরানোর দাবি
মায়াবতী কংগ্রেসের অতীত ভুলের কারণে বাংলাদেশি হিন্দুদের যে কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে, তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এদের ভারতে ফিরিয়ে এনে সুরক্ষিত আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা উচিত। বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।”
মহারাষ্ট্রে বিজেপির সমাবেশ
বিজেপি বিধায়ক নীতীশ রানে ১০ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রে একটি বিশাল হিন্দু সমাবেশের আয়োজনের কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামব। বাংলাদেশি হিন্দুদের জানাতে চাই যে তারা একা নয়। এই সমাবেশের মাধ্যমে আমরা দেখাব যে হিন্দুরা এই নৃশংসতা আর সহ্য করবে না।”
সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই ইস্যু নিয়ে বিএসপি এবং বিজেপির কার্যক্রম ভারতীয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। হিন্দুদের সুরক্ষা ও মানবাধিকার রক্ষায় বিভিন্ন দলকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে হিন্দুদের অধিকার নিয়ে এই ধরনের বক্তব্য ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠছে। আগামী দিনে এই বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। বাংলাদেশি হিন্দুদের সুরক্ষার বিষয়ে বিএসপি এবং বিজেপির উদ্যোগ নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ সৃষ্টি করছে। বিষয়টি কেবল ভারত নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও নজর কাড়বে। একইসঙ্গে, বিরোধী দলগুলির নীরবতাও বড় প্রশ্ন তুলছে।