এবার বিবিসি-র তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’-এর প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ পৌঁছল দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (JNU)। আজ, মঙ্গলবার জেএনইউ-তে ওই তথ্যচিত্র (BBC documentary) প্রদর্শনের আয়োজন করেছিল কিছু পড়ুয়া। তার উপরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সম্প্রীতি বিঘ্নিত করতে পারে।’
বিবিসি-র এই তথ্যচিত্র সামনে আসার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে এই ছবিটি। কারণ গুজরাতের সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে তৈরি এই ছবিকে কেন্দ্রীয় সরকার ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়েছে। দু’দশক আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় গোধরা-কাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে এক ঘণ্টার ওই তথ্যচিত্রে।
অন্যদিকে, কেরলে দেখাবে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই ওই তথ্যচিত্র দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার গত পরশু তথ্য প্রযুক্তি আইনের ধারা বলে ভারতের ইন্টারনেট পরিষেবা থেকে ওই তথ্যচিত্রের সমস্ত লিংক মুছে দেওয়ার নির্দেশ জারি করে। লিংক শেয়ার করাও বেআইনি, জানানো হয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়।
‘দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় সরকার। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তথ্যচিত্রটি তৈরি। যদিও বিবিসি দাবি করেছে, যথেষ্ট গবেষণা করে তথ্যচিত্রটি তৈরি।
বিদেশমন্ত্রকে মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র নিয়ে বলেছিলেন, 'এই তথ্যচিত্রটির পিছনে নির্দিষ্ট অ্যাজেন্ডা রয়েছে।' প্রসঙ্গত, ‘ইন্ডিয়া:দ্য মোদী কোয়েশ্চন’-এর দুই পর্বে ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় মোদীর 'ভূমিকা' তুলে ধরা হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও জানিয়েছেন, এই তথ্যচিত্রের মোদীর চরিত্রায়ণের সঙ্গে তিনি একমত নন। অভিযোগ, এই তথ্যচিত্রটিতে প্রধানমন্ত্রী তথা গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর 'ভুল চরিত্রায়ণ' হয়েছে।
তবে বিবিসি জানিয়েছে, এই তথ্যচিত্রে বহু মানুষের প্রতিক্রিয়া নেওয়া হয়েছে। তাতে যেমন প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন, তেমনই বিজেপির সদস্যদের প্রতিক্রিয়াও আছে। পরে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিবের তরফে ইউটিউব ও টুইটারে সেই তথ্যচিত্র সংক্রান্ত যাবতীয় ভিডিয়ো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই তথ্যচিত্রের লিঙ্ক সম্বলিত ৫০টিরও বেশি টুইট ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র।