ভারতে চরবৃত্তির আরও এক চাঞ্চল্যকর কাহিনি ফাঁস। চোখ কপালে তদন্তকারীদেরও। ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে পাকিস্তানি চর সন্দেহে গ্রেফতারের পর থেকে দেশজুড়ে তল্লাশি চালিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন সন্দেহভাজনকে স্পাইকে পাকড়াও করা হয়েছে। যাদের জেরা করে উঠে এসেছে নানাবিধ ঘটনা।
উত্তরপ্রদেশ ATS এমন একজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে যে কেবলমাত্র পাকিস্তানি মহিলার প্রেমের জালে ফেঁসেছিল তাই নয়, ভারতে হামলারও ছক কষছিল। ধৃতের নাম মহম্মদ তুফেল। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাকিস্তানি নাগরিক নাফিসার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
নিজেকে সাধারণ এক পাকিস্তানি নাগরিক বললেও আসলে নাফিসা ISI-এর সিনিয়র হ্যান্ডলার। তুফেলকে প্রেমের জালে এমন ফাঁসালেন, সে-ও নিয়মিত নাফিসাকে ভারতের স্পর্শকাতর এলাকার ছবি, ভিডিও এবং গোপন তথ্য পাচার করতে শুরু করল। নাফিসার কথাতেই তুফেল নিজের ফোনের GPS ট্র্যাকার সর্বদা অন করে রাখত। যেখানেই যেত, সেখানকার ছবি-ভিডিও নাফিসাকে পাঠাত।
পুলিশি জেরায় তুফেল জানিয়েছে, নাফিসা বলত, 'তোমায় যতবারই দেখি মন ভরে না। তাই যেখানেই যাবে আমায় ছবি-ভিডিও পাঠাবে'। তুফেলও বাধ্য প্রেমিকের মতো সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করত। নাফিসার প্রেমে সে এতটাই হাবুডুবু খাচ্ছিল, বুঝতেই পারেনি ধীরে ধীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েছে। নিজেকে সে 'গজবা-এ-হিন্দ' এবং 'হদিস'-এর জন্য লড়াই করা সেনা হিসেবে উল্লেখ করত।
কট্টরপন্থার সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করে ফেলেছিল তুফেল। এমনকী, আরও যুবকদেরও এই কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাত। তার ফোন থেকে ৮০০ পাকিস্তানি নম্বর পাওয়া গিয়েছে। ১৯টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালাত সে। বারণসী এবং আজমগড়ের বাসিন্দা বেশ কয়েক জন যুবককে পাকিস্তানি মৌলানার ভিডিও পাঠিয়ে উস্কানি দিত তুফেল।
নাফিসার কথাতেই দিল্লি, বারাণসী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ভিডিও পাঠাত তুফেল। এভাবেই ISI ভারতের নানা স্পর্শকাতর এলাকা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছিল বলে অনুমান তদন্তকারীদের। ভারতের যুব সম্প্রদায়কে ধীরে ধীরে কট্টরপন্থার দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তুফেলকে।
পঞ্জাব, হায়দ্রাবাদ, উত্তরপ্রদেশের কনৌজে আয়োজিত কট্টরপন্থী বৈঠকে অংশ নিত তুফেল। তার মোবাইল চ্যাট থেকে বাবরি ধ্বংসের বদলা নেওয়ার মতো মেসেজও পাওয়া গিয়েছে। তবে অনেট চ্যাটই ডিলিট করে ফেলেছিল সে। সেগুলিই উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।