মঙ্গলবার সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দীর্ঘ শুনানি। প্রধান বিচারপতি বিআর গবই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহ-র বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি সংসদ কর্তৃক পাশ হওয়া এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতা সম্পর্কে নিজের গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ রাখেন। তিনি বলেন, 'সংসদে পাশ হওয়া আইনগুলোতে সাংবিধানিক বৈধতার একটি অনুমান থাকে। কোনও আইন অসাংবিধানিক তা প্রমাণ করার জন্য যদি সুনির্দিষ্ট মামলা না থাকে, তাহলে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না।'
প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে মামলার শুনানি চলে। সরকার-সহ সব পক্ষের বক্তব্য শোনেন বিচারপতিরা। নয়া আইনের থ্রি ডি ধারা নিয়েও আলোচনা হয়। স্থগিতাদেশের আবেদন জানানো হয়। তবে মঙ্গলবার এই মামলায় কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি শীর্ষ আদালত। বুধবার ফের শুনানি হবে।
সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা আদালতের কাছে আবেদন করেন যেন শুনানি তিনটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। বলেন, 'আদালত আগেই তিনটি বিষয় চিহ্নিত করেছিল। তবে, আবেদনকারীরা এখন তিনটি বিষয় ছাড়াও আরও অনেক বিষয়ের শুনানি চান। এই তিনটি বিষয়ের জবাবে আমি আমার হলফনামা দাখিল করেছি। আমার অনুরোধ, তিনটি বিষয়ের মধ্যেই যেন আলোচনা হয়।' তবে কেন্দ্রের এই আবেদনের বিরোধিতা করেন আবেদনকারীদের পক্ষে উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং অভিষেক মনু সিংভি। তাঁরা পাল্টা যুক্তি দেন, এত গুরুত্বপূর্ণ আইন টুকরো টুকরো করে শোনা যাবে না। সার্বিকভাবে শুনলে তবেই বিষয়টা পরিষ্কার হবে।
সিব্বল বলেন, সংশোধিত ওয়াকফ আইনটি সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদ (যা ধর্ম পালন, পালন এবং প্রচারের অধিকার নিশ্চিত করে) লঙ্ঘন করে। ওই আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টকে আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করার বিষয়ে শুনানি হওয়া উচিত।
ওয়াকফের সম্পত্তি বেড়েছে বলে অনেকে দাবি করেছে। এই দাবির ভিত্তি কী আছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তাঁর অভিযোগ, ২০১৩ সাল থেকে ওয়াকফ সম্পত্তির পোর্টালে নথিভুক্ত হতে শুরু করে। সেটাকেই কেন্দ্র সম্পত্তি বৃদ্ধি বলে দাবি করছে যা আদতে ঠিক নয়।
সিব্বলের আরও দাবি, সংশোধিত আইনে মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এর আগের আইনগুলোতে যা ছিল না। নয়া আইনে ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালনার অধিকারও মুসলিমদের থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।