Nagpur Violence Over Aurangzeb Controversy: মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহরে সম্প্রতি এক বিতর্কিত ঘটনার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP) এবং বজরং দলের কর্মীরা আওরঙ্গজেবের প্রতীকী কবর দাহ করে, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে। এর জেরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে এবং বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হয়।
সোমবার সকালে নাগপুরের মহল এলাকায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের কর্মীরা আওরঙ্গজেবের প্রতীকী কবর দাহ করে। তাদের দাবি, আওরঙ্গজেব ভারতীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির বিরোধী ছিলেন, তাই তার কবরের প্রতীক পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। কিন্তু মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবি, দাহের সময় ব্যবহৃত কাপড়ে ধর্মীয় বাণী লেখা ছিল, যা পোড়ানোর মাধ্যমে তাদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে তারা শিবাজি প্রতিমার সামনে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখায়।
বিক্ষোভ বাড়তে থাকলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এরপর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ গণেশ পেঠ থানায় গিয়ে বজরং দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সন্ধ্যা নামতেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং সংঘর্ষ বেধে যায়।
সংঘর্ষ চলাকালীন বেশ কিছু সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয় এবং আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। নাগপুর পুলিশের পক্ষ থেকে সংঘর্ষে যুক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সংঘর্ষের পর প্রশাসন নাগপুরের স্পর্শকাতর এলাকায় র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (RAF) মোতায়েন করে। দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পুলিশের কঠোর নজরদারিতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
নিতিন গড়কড়ি ও মুখ্যমন্ত্রীর শান্তির বার্তা:
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ি নাগরিকদের শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "নাগপুর শহর বরাবরই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতীক। কেউ যেন গুজবে কান না দেয় এবং আইন নিজের হাতে না তুলে নেয়।"
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিসও নাগরিকদের ধৈর্য ধরতে এবং প্রশাসনকে সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, "আমরা নাগপুর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যেন উসকানিমূলক বক্তব্যে প্রভাবিত না হন।"
বর্তমানে নাগপুরের বিভিন্ন এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করার কাজ করছে এবং যারা সামাজিক মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক বার্তা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং শান্তি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।