জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এখনও ধরা পড়েনি হামলাকারীরা। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি) জোরকদমে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনায় একাধিক চাক্ষুষ সাক্ষীর পাশাপাশি এবার ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে পহেলগাঁওয়ের জিপলাইন অপারেটর মুজাম্মিলকে।
মুজাম্মিল সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর ভাই মুখতার আজ পর্যন্ত দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, 'ভাইটা ঘটনার পর খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ওর হার্টের সমস্যা রয়েছে। হামলার পর দৌড়ে বাড়ি চলে আসে, কিছুই বলতে পারছিল না।'
কেন ‘আল্লাহ হু আকবর’ বলেছিলেন?
হামলার পর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায় মুজাম্মিল ‘আল্লাহ হু আকবর’ বলছেন। এনআইএ সেই ভিডিও-সহ নানা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে ফের জেরা শুরু করেছে। আজতক-এর সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে মুখতার জানান, 'হামলার দিন ও বাড়ি এসে চা খাচ্ছিল, তখনই পুলিশ থেকে ফোন আসে। তারপরই ও থানায় চলে যায়। আমরা খাবার নিয়ে থানায় গিয়েছিলাম, কিন্তু কথা হয়নি। এখন এনআইএ ফের জেরা করছে।'
তবে এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘আল্লাহ হু আকবর’ বলা অনেক সময় একটা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। যেমন হিন্দুদের মধ্যে কেউ হঠাৎ ভয় পেলে ‘হে রাম’ বলেন। ফলে মুজাম্মিলের সরাসরি হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
কেন ঋষিকে জিপলাইন থেকে ছাড়লেন?
তবে তদন্তকারী সংস্থার একাংশের প্রশ্ন, হামলার সময় মুজাম্মিল কেন ঋষি ভাট নামে এক পর্যটককে জিপলাইন থেকে নামিয়ে দিলেন? এনআইএ-র দাবি, মুজাম্মিল এই প্রশ্নে বারবার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। একবার বলছেন বিদ্যুৎ সমস্যা হয়েছিল, আবার একবার বলছেন, ভয়ে হাত কাঁপছিল।
পরিবারের অবস্থা কী?
মুখতার জানিয়েছেন, 'আমরা চার ভাই, দুই বোন আর মা-বাবা। মুজাম্মিল গত ৩-৪ বছর ধরে বৈসরন ভ্যালিতে জিপলাইন চালায়। ওর কাজই পর্যটকদের রাইড করানো। হামলার সময়ও ওর ফোকাস ছিল জিপলাইনে। পুরো হামলার ঘটনা ও চোখে দেখেনি।'
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ফের জেরা
মুজাম্মিলকে প্রথমবার জেরা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত সোমবার আবার ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় এনআইএ ফের তাকে ডেকে পাঠায়। এখন ফের খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে মুজাম্মিলের কোনও ধরনের সহায়তা হামলাকারীদের প্রতি ছিল কি না।