বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। লালু প্রসাদ যাদবকে তিনিই নিজের হাতে তৈরি করেছেন, ভরা অধিবেশনে দাবি করে বসলেন নীতীশ। যা নিয়ে হৈ হট্টোগোল শুরু হয়ে যায়। স্পিকার দুই পক্ষকেই শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এদিন অধিবেশন চলাকালীন বক্তব্য রাখছিলেন নীতীশ কুমার। তিনি বলেন, 'বিহারে এক সময় কিছুই ছিল না। মাত্র ৬ টা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ছিল। আমরা সব বানিয়েছি।' এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন তেজস্বী। নিজের আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে তিনি বলতে থাকেন। তখনই নীতীশ তেজস্বীকে লক্ষ্য করে বলেন, 'তোমার বাবাকে আমিই প্রতিষ্ঠা দিয়েছি। উনি যখন এসেছিলেন বিহারে সেই সময় কিছু ছিল না। তোমাদের জাতের লোকজনই আমাকে বারণ করেছিলেন। বলেছিলেন, কেন ওকে সমর্থন করছেন? আমি তাদের কথা শুনিনি। তোমার বাবাকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম।'
এদিকে নীতীশের এই বয়ানের পর তেজস্বী যাদব অভিযোগ করেন, অতীতের প্রসঙ্গ টেনে এখন নিজের পিঠ বাঁচাতে চাইছেন নীতীশ। সরকারের ব্যর্থতাকে ঢাকার চেষ্টা করছেন তিনি।
তেজস্বীর কথায়, '২০০৫ সালের আগে কি বিহার নামে কোনও রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল না? রাজ্যপাল সেটাই পড়েন যেটা সরকার তাঁকে দেয়। নতুন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বিহারের ইতিহাস নিয়ে ওয়াকিবহালও নন। আগের রাজ্যপাল যে ভাষণ দিয়েছিলেন, এবারও তাই দেখছি। প্রতিবার রাজ্যপাল একই কথা বলেন।'
তেজস্বীর আরও সংযোজন, '২০০৫ সাল নীতীশ কুমারের বয়স ছিল ৫৫ বছর। তিনি তখন কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করে ফেলেছেন। যে বিধানসভায় এখন এই বিতর্ক চলছে, ভাষণ দিচ্ছেন নীতীশ কুমার, সেটাও ছিল। অনেকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য লালুজির নিন্দা করতে থাকে। নীতীশ কুমারের সরকার যদি আগামী ৪০ বছরও ক্ষমতায় থাকে তাহলেও তারা ২০০৫-এর আগের কথা বলতেই থাকবে।'
প্রসঙ্গত, এই বছরই বিহারে বিধানসভা ভোট। তার আগে আরজেডি ও ডেজিইউ এই দুই দলই একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছে। ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিহারে লালু প্রসাদের দলের সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার চালাচ্ছিলেন নীতীশ। তবে তিনি পরে পাল্টি খেয়ে বিজেপির জোটে যোগ দেন। সেই থেকে তিক্ততা বেড়েছে দুই শিবিরের মধ্যে।