গ্রেটার নয়ডায় ভয়ঙ্কর পণহত্যা কাণ্ডে নয়া মোড়। স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে গ্রেফতার স্বামী বিপিন রবিবার সকালে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে ধরা পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সিরসা চৌরাহার কাছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী নিক্কিকে হত্যার আগে যে দাহ্য পদার্থ (‘থিনার’) কিনেছিল বিপিন, সেটি উদ্ধারের জন্য তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই সময় বিপিন নাকি এক পুলিশ অফিসারের অস্ত্র ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। বারবার সতর্ক করার পরও না থামায় বাধ্য হয়ে পুলিশ গুলি চালায়। এতে তার পায়ে আঘাত লাগে।
নৃশংস হত্যার বিবরণ
গত বৃহস্পতিবার ভয়াবহ দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছে নয়ডা। নিক্কি নামে এক যুবতীকে শ্বশুরবাড়ির অন্দরেই পুড়িয়ে মারা হয়। একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিপিন ও তার পরিবারের এক মহিলা সদস্য নিক্কিকে চুল টেনে ও মারধর করে নির্যাতন করছে। অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, আগুনে জ্বলতে থাকা অবস্থায় সিঁড়ি দিয়ে খুঁড়িয়ে নামছেন নিক্কি, পরে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় মেঝেতে বসে রয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
পণের অমানবিক চাপ
নিক্কির বড় জা কাঞ্চন জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই দুই ভাইবধূকে পণের জন্য নিয়মিত নির্যাতন করা হতো। শ্বশুরবাড়ির দাবি ছিল ৩৬ লাখ টাকা। কাঞ্চনের অভিযোগ, 'আমাদের প্রায়ই বলা হতো, বিয়েতে এই জিনিসটা পাওয়া যায়নি, ওইটা দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতেও ভোর চারটে পর্যন্ত আমায় নির্যাতন করা হয়। তারপর বিকেলে আমার চোখের সামনে ছোট জাকে মারধর করে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আমি বাঁচানোর চেষ্টা করি, কিন্তু পারিনি। অজ্ঞান হয়ে যাই।'
নিক্কির ছেলেও মায়ের হত্যার সাক্ষী। তার কথায়, 'মাম্মির গায়ে তরল কিছু ঢেলে, মারধর করে লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।'
পুলিশের পদক্ষেপ
নিক্কির মৃত্যুর পর একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয় এবং জনমনে ক্ষোভ ছড়ায়। পুলিশ ইতিমধ্যেই বিপিন-সহ পরিবারের কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। রবিবার সকালে বিপিন পালানোর চেষ্টা করায় তাকে গুলি করে আটক করা হয়। বর্তমানে সে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন।