NEET পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ এবং UGC-NET পরীক্ষা বাতিল নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন রাহুল গান্ধী। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে পরীক্ষা-বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি নিশানা করেছেন কংগ্রেস সাংসদ। বলেছেন, 'দেশে নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়েছেন মোদীজি। কিন্তু কোনও কারণে নরেন্দ্র মোদী প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় রুখতে পারছেন না, তা না হলে চাইছেন না ঠেকাতে।' এই কেলেঙ্কারিকে 'জাতীয় সঙ্কট' বলে বর্ণনা করেছেন সনিয়া-পুত্র। মোদীর সঙ্গে প্রাক্তন দুই প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং মনমোহন সিংয়ের তুলনা টেনেছেন রাহুল।
এই প্রসঙ্গে রাহুল আরও বলেছেন, 'এসব হচ্ছে, তার কারণ আমাদের সব প্রতিষ্ঠান দখল করে নিয়েছে। উপাচার্যদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হচ্ছে না। শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে বিজেপি।' দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রাহুল। সোমবার সংসদে এই বিষয়টি উত্থাপিত করা হবে বলে জানিয়েছেন সাংসদ।
মোদীকে আক্রমণ করে রাহুল এ-ও বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। তাই এভাবে সরকার চালাচ্ছেন। মানুষের মধ্যে ভয় সঞ্চার করাই মূল অ্যাজেন্ডা...যদি বাজপেয়ীজি, মনমোহন সিংজি হতেন, তা হলে তাঁরা হয়তো টিকে থাকতে পারতেন, কারণ তাঁদের মধ্যে নম্রতা, শ্রদ্ধা ছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী এসবে বিশ্বাস করেন না।'
পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস বিতর্কে বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পড়ুয়াদের একাংশ।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে চলতি বছরের নিট পরীক্ষা বাতিল করার দাবি জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। গত মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির কাছে জবাব তলব করেছে শীর্ষ আদালত। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, 'পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা জবাব চাই।'
নিট পরীক্ষা ঘিরে বিতর্কের মধ্যে এবার UGC NET-এর জুন মাসের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। স্বচ্ছতার প্রশ্নে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৮ জুন এই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। ২টি শিফটে পরীক্ষা নিয়েছিল ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে ফের এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই ব্যাপারে শীঘ্রই জানানো হবে। জানা গিয়েছে, ওই পরীক্ষায় কিছু অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। বুধবার ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম থ্রেট অ্যানালাইসিস ইউনিটের কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশন বা ইউজিসি। সেখানে জানানো হয়েছে যে, ওই পরীক্ষায় বেশ কিছু অনিয়ম হয়েছে। তারপরেই স্বচ্ছতার প্রশ্নে পুরো পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রক। এই ঘটনায় তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে।