সোমবার জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে দাচিগাম বনাঞ্চলে তল্লাশি অভিযান চলাকালীন গুলির শব্দ শোনা যায়। অপারেশন মহাদেব চলাকালীন তিনজন সন্দেহজনক সন্ত্রাসবাদীর কথা জানতে পারে বাহিনী। এরপরেই তিনজন সন্ত্রাসবাদীকে ঘিরে ফেলে বাহিনী। গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় তাদের। মনে করা হচ্ছে, এই তিনজনই পাহেলগাঁও হামলার সময়ও জড়িত ছিল। সকাল সাড়ে এগারোতা নাগাদ এই তিন সন্ত্রাসবাদীকে গিরে ফেলে সেনাবাহিনী। শুরু হয় গুলির লড়াই।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং সিআরপিএফের যৌথ অভিযান চলছে। তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল দাচিগাম বনের উপরের অংশে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল। অভিযান চলাকালীন হঠাৎ গুলির শব্দ শোনা যায়, যা এলাকায় উত্তেজনা তৈরি করে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলির বিশ্বাস, সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী টিআরএফ (দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট) এর সন্ত্রাসবাদীরা এই এলাকায় লুকিয়ে থাকতে পারে। বিশেষ করে দাচিগাম জাতীয় উদ্যানকে টিআরএফ সন্ত্রাসীবাদীদের প্রধান আস্তানা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এই গোষ্ঠীকেই পাহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য দায়ী করা হচ্ছে। আসলে কিছুদিন আগেই একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে যোগাযোগ চালাচ্ছিল এই তিন জঙ্গি। যা ধরে ফেলেন ভারতের সেনারা। এরপরেই আজ অতর্কিতে হামলা চালায় সেনাবাহিনী।
দাচিগামের জঙ্গলে সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানা ভেঙে ফেলা হয়েছে
জানুয়ারির শুরুতে, দাচিগামের ঘন জঙ্গলে একটি টিআরএফ আস্তানা ধ্বংস করা হয়। সেই অভিযানের সময়ও নিরাপত্তা বাহিনীকে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছে
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, সোমবার নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকাটি ঘিরে রেখেছে এবং তল্লাশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে। যদিও এখনও কোনও সন্ত্রাসবাদী নিহত বা গ্রেপ্তার হওয়ার খবর সামনে আসেনি। তবে ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরা। স্থানীয় প্রশাসন সাধারণ জনগণকে অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এলাকা থেকে দূরে থাকার এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য আবেদন জানিয়েছে।
পাহেলগাঁও হামলার পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে অপারেশন সিঁদুর শুরু করেছিল ভারতীয় সেনা। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা জঙ্গি ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করে দেয় ভারত। তবুও, পাহেলগাঁও হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসবাদীদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। আর সে কারণে সংসদে বিরোধী দলগুলোও এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাঁদের দাবি ছিল, কীভাবে পাকিস্তান থেকে এসে সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালিয়ে ফের নিশ্চিন্তে ফিরে গেল? এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে জবাব দিতে হবে। মঙ্গলবারই এ ব্যাপারে সংসদে ভাষণ দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তার আগে এই সাফল্য নিশ্চিতভাবেই আরও স্বস্তি দেবে তাঁকে।